প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- ফের পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে মৃত্যু হল এক মহিলার। ঘটনাটি ঘটেছে জোড়াবাগান থানা এলাকায় কলকাতার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে। বুধবার রাতে ওই পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। তাতে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এছাড়ও দুজন আহত হয়েছে। জানা গিয়েছে মহিলার নাম ইলরা আগরওয়াল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।৬৫ বি পাথুরিয়া ঘাট স্ট্রিট। বিপজ্জনক চারতলা বাড়ির তিন তলার ছাদ ভেঙে পড়ে। আটকে পড়ে এক দম্পতি ও তাদের নাবালক পুত্র। ৩ জনকেই উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় মহিলার। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা পৌরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৫ বি পাথুরিয়া ঘাট স্ট্রিটের একটি ঘোষিত বিপজ্জনক বাড়ির তিন তলার একটি অংশ ভেঙে পড়ে। সূত্রের খবর, ওই তিন তলার ব্যালকনিতে বসে ছিলেন ৫০ বছরের অজয় আগরওয়াল ও ৪৮ বছরের ইলা আগরওয়াল। আচমকা ভেঙে পড়ার ফলে সেই ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে যায় দুজন। সেই ভেঙে পড়ার আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে এসে খবর দেন স্থানীয় কাউন্সিলারকে। খবর দেওয়া হয় জোড়া বাগান থানায়, দমকল ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টকে। ততক্ষণে জানা যায় ওই বাড়ির তিন তলায় আটকে রয়েছে এক নাবালক। যার নাম রাঘব আগরওয়াল (১৫)। দমকল কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্য দিকে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ও দমকল কর্মীরা চাপা পড়া দুজনকে উদ্ধার করার জন্য হাত লাগায়। একের পর এক বড়ো বড়ো পাথর, কাঠের কাঠামো সরাতে শুরু করে। গ্যাস কাটার নিয়ে এসে লোহার রড কেটে উদ্ধারকাজ চালানো হয়। রাত ২টো নাগাদ আহত অবস্থায় অজয় আগরওয়ালকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রাত প্রায় পৌনে ৩টে নাগাদ ইলা আগরওয়ালকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মেডিকেলে পাঠানো হয়। দুজনের অবস্থা-ই আশঙ্কাজনক ছিল। পরে হাসপাতালে ইলা আগরওয়ালের মৃত্যু হয়। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা জানিয়েছেন, এই বাড়িটি অনেক আগেই বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল। বহু পুরনো বাড়ি। বাড়ির মালিককে বার বার করে বলা সত্ত্বেও কাজ করেননি। বহু পরিবার বসবাস করত। যাদের সামর্থ ছিল তারা চলে গিয়েছেন। যাদের নেই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।এদিন সকালে ঘটনাস্থলে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘কলকাতা পুরসভার নতুন বসবাসকারি আইন অনুযায়ী যাঁরা যেখানে দীর্ঘদিন ধরে থাকেন, তা যদি ভাড়া বাড়িও হয়, তাহলে সেখান থেকে দূরে চলে গেলেও তার ভোগস্বত্ত্ব থাকবে। তাই বিপজ্জনক বাড়িতে কারুর ভিটেমাটি চলে যাওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আপাতত ৬৫এ পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের বাড়ির সামনের খোলা মাঠে পুরসভার তৈরি করে দেওয়া অস্থায়ী ছাউনিতে তাঁরা থাকুন। পরে এই বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে যখন এখানে নতুন বিল্ডিং করবেন, তখন এই বাড়ির ১০ টি পরিবারের ৫১ জন বাসিন্দা, যতটুকু এলাকা জুড়ে বসবাস করতেন, তার সমপরিমাণ থাকার জায়গা পাবেন।’