দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- চাঁদের মাটিতে ভেঙে পড়েছে রাশিয়ার মহাকাশযান লুনা-২৫। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক পরে যে চন্দ্র অভিযানের জন্য উদ্যোগী হয়েছিল রাশিয়া, তা ব্যর্থ হয়েছে।সোমবার, ২১ অগস্ট চাঁদের মাটি স্পর্শ করার কথা ছিল লুনার। কিন্তু তার কয়েক প্রহর আগেই বিধ্বস্ত হল চন্দ্রযানটি। সফট ল্যান্ডিংয়ের প্রায় শেষ পর্যায়েই চলে এসেছিল লুনা। কিন্তু শনিবারই বিপত্তির প্রথম শুরু। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানায়, শেষ মুহূর্তে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। প্রি-ল্যান্ডিংয়ের জন্য যে কমান্ড দেওয়া হয়েছিল, তা কর্ণপাত করেনি লুনা। আর তাতেই জরুরি অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার শেষমেশ ভেঙে পড়ল চন্দ্রযানটি। রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা রোসকসমসের তরফে এই খবরটি এদিন জানানো হয়। যদিও লুনার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। প্রসঙ্গত, গত ৪৭ বছরে এটাই ছিল রাশিয়ার প্রথম চন্দ্রাভিযান। কিন্তু তার সাফল্য অধরাই রয়ে গেল।রোসকসমস তাদের লুনা-২৫ মিশনের দুঃখজনক ফলাফলের কথা ঘোষণা করে বলেছে, “যন্ত্রটি একটি অপ্রত্যাশিত কক্ষপথে চলে গিয়েছে এবং চাঁদের পৃষ্ঠে সংঘর্ষের ফলে অস্তিত্ব সঙ্কটজনক।” টেলিগ্রামে একটি অফিসিয়াল বিবৃতি জারি করে রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থাটি লিখেছে, ‘গত ১৯ অগস্ট লুনা-২৫ চন্দ্রযানের একটি প্রি-ল্যান্ডিং উপবৃত্তাকার কক্ষপথ স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মস্কোর স্থানীয় সময় ১৪.৫৭ মিনিট নাগাদ মহাকাশযানের সঙ্গে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়। তারপরে ১৯ এবং ২০ অগস্ট চন্দ্রযানের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তাতে কোনও ফলাফল পাওয়া যায়নি।’প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে যে, রাশিয়া থেকে আসা মহাকাশযান লুনা-২৫ অবতরণের সময় মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বলা হচ্ছে, অবতরণের ঠিক আগে মহাকাশ সংস্থা মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং লুনা-২৫ সোজা গিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তবে কি সফট ল্যান্ডিং করার জন্য যতটা গতির প্রয়োজন ছিল, তার থেকে অনেক বেশি গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল লুনা-২৫?রাশিয়ান ফেডারেল স্পেস এজেন্সি (স্টেট স্পেস কর্পোরেশন রোসকোসমস) আনুষ্ঠানিকভাবে লুনা ২৫-এর চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। রবিবার রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা যানটির আছড়ে পড়ার কারণ হিসেবে জানিয়েছে, চাঁদে মহাকাশযানের অবতরণের সময় কিছু গোলযোগের কারণে সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছিল। আর তারপরেই যানটি নিজের পথ থেকে সরে যায়। যার ফলে এটি চন্দ্রপৃষ্ঠে ধাক্কা খাওয়ার পরে এর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি।