দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় সাসপেন্ড করা হল নীলগঞ্জ ফাঁড়ির ওসিকে। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সোমবার ওসি হিমাদ্রি ডোগরাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।নজরে দত্তপুকর থানার আইসির ভূমিকাও। অভিযোগ, বিস্ফোরণস্থল থেকে মেরেকেটে ১ কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত নীলগঞ্জ আউটপোস্ট। রবিবার সকালে নীলগঞ্জেই বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি ভাবে বাজির কারবার চলছিল। এই ঘটনায় পুলিশ উদাসীন ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। যদিও সোমবার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত আড়াই-তিন মাসের মধ্যে এই এলাকায় অনেক তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার পরও এই ঘটনা ঘটেছে,যা দুর্ভাগ্যজনক।’’বিস্ফোরণের ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশ সব জেনেশুনেও চুপ ছিল। পুলিশকে বার বার অভিযোগ করা হলেও, স্মারকলিপি জমা দেওয়া হলেও পুলিস বা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বিস্ফোরণকাণ্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তাঁর বক্তব্য, ‘দোকান পিছু আইসি ও মন্ত্রী ৫০ হাজার করে তোলা তুলতেন। ৬টা বাজি কারখানা থেকে ৫০ হাজার করে তোলা তোলে। আইসি ও মন্ত্রী অর্ধেক-অর্ধেক করে নেয়।’এমনকি এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের সমাবেশ থেকে দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে পুলিসকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ও। যিনি নিজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে! মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কোনও বেআইনি কাজ করছে। পুলিশ চোখ বুজে দেখছে। সব পুলিশ যদিও নয়। লোকাল থানাগুলিতে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা কে কী করছেন, সেটা আমি আর বললাম না! নজর রাখছি, কে কী করছে না করছে।’ দত্তপুকুর বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই ছিল যে, গোটা একটা বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যায়। উড়ে যায় আশপাশের একাধিক বাড়ির ছাদ। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গোটা এলাকা। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে দেহ। এমনকি দেহাংশ ছিটকে কয়েকশো মিটার দূরে বাড়ির ছাদে-উঠোনে গিয়েও পড়েছে! এদিন বিস্ফোরণস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক দল। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় এনআইএ-ও।এই ঘটনায় রবিবার গভীর রাতে নীলগঞ্জ এলাকা থেকে কেরামত আলির ‘সহযোগী’ শফিক আলি ওরফে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার ঘটনাস্থলে যান পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ‘‘এফআইআরে চার জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেরামত আলি, রবিউল আলি, শামসুল আলি মৃত। বাকি এক জন রমজান আলিকে আমরা খুঁজছি। তিনি আইএসএফের ব্লক পর্যায়ের নেতা।’’ যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশের বক্তব্যের ভিত্তিতে আইএসএফের তরফ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।