দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- কামদুনি গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ৩ মূল অভিযুক্তের মধ্যে ২ জনের ফাঁসির সাজা মকুব করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আরও ১ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। এছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৩ অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা কমিয়ে ৭ বছর করেছে আদালত। যার ফলে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেতে চলেছেন তাঁরা। রায় শুনে আদালতের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতার বাল্যবন্ধু তথা প্রতিবাদী মৌসুমী কয়াল।কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ফাঁসির সাজা রদ। পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের। দোষী আনসার আলি মোল্লা এবং সইফুল আলি মোল্লাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। বেকসুর খালাস আমিন আলি, ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলাম। ২০১৩ সালের ৭ জুন পরীক্ষা দিয়ে কামদুনির বাড়িতে ফিরছিলেন রাজারহাট ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীটি। অভিযোগ, বাস থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে রাস্তা থেকে জোর করে পাঁচিল ঘেরা একটি ঘরে নিয়ে যায় নজন দুষ্কৃতী। সেখানেই দফায় দফায় চলে গণধর্ষণ। এমনকী নির্যাতনের পর ছাত্রীটিকে ভেড়িতে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা।এদিকে, বাড়ির মেয়ের খোঁজখবর শুরু হয়। গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ৮ বিঘে ভেড়ি অঞ্চলে একটি পাঁচিলের পাশে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ছাত্রীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ধিক্কার-আন্দোলন শুরু হয়। রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে। তদন্তভার হাতে নিয়ে সিআইডি অভিযুক্ত ৮জনকে গ্রেপ্তার করে।ওই মামলায় ২০১৬ সালে ৬ জন অভিযুক্তর সাজা ঘোষণা করেছিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। শুক্রবার সেই মামলায় রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট। ফাঁসির সাজা রদ করে আদালত। আনসার আলি মোল্লা এবং সইফুল আলি মোল্লাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আমিন আলি এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলামকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। অপরাধ অনুযায়ী এই চারজনের সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে, সে কারণেই অবিলম্বে বেকসুর খালাসের নির্দেশ বলেই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের।