প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না, শুক্রবার এ কথা জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের ওই বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যপাল যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তাঁরা নিতে পারবেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও।রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ মামলায় শীর্ষ আদালতে কার্যত ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল আচার্য তথা রাজ্যপালকে। মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও কেন রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা জানতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্ট সি ভি আনন্দ বোসকে নোটিস পাঠাল। এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে নোটিসের জবাব দিতে হবে। পরবর্তী শুনানি ৩১ অক্টোবর।শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি | তিনি সওয়াল করেন, উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন। তাই এই সময়ের মধ্যে নিযুক্ত হওয়া নতুন উপাচার্যরা যাতে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা হোক। এর পর বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁরা নিজেদের বেতন পাবেন, কিন্তু উপাচার্য হিসেবে কোনও বাড়তি সুযোগ-সুবিধা, বাড়তি আর্থিক সুবিধাও পাবেন না।রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আচার্য সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার ও বোসের মধ্যে সংঘাতের ফলে রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও কোনও স্থায়ী উপাচার্য নেই। গত ২১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পর গত ১৫ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিজেই সার্চ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শীর্ষ আদালত।সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সব পক্ষ নাম সুপারিশ করলেও সার্চ কমিটি এখনও তৈরি হয়নি। তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গত ১ অক্টোবর রাজ্যের আরও ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভাবে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন বোস। তাঁদের মধ্যে এক জন আবার অবসরপ্রাপ্ত এক আইপিএস অফিসার। সেই সময়েই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। এর পাশাপাশি, রাজ্যপালের প্রতিনিধি হিসাবে যে চার জনের নাম জমা পড়েছিল, তাঁদের দু’জনের বিষয়েও শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে মিলেছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রে। তারপর সুপ্রিম কোর্টের শুক্রবারের শুনানিতে বড় ধাক্কা খেলেন রাজ্যপাল।