দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-বুধবার বঙ্গ বিজেপির মহা সমাবেশে যোগ দিতে কয়েক ঘণ্টার ঝটিকা সফরে কলকাতায় অমিত শাহ৷ তার আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা এই খোলা চিঠি প্রকাশ করল তৃণমূল৷বুধবার সকালেই অমিত শাহের উদ্দেশে দু পাতার খোলা চিঠি লিখেছেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। চিঠি লিখেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।শাহকে দেওয়া চিঠিতে সায়নীরা লেখেন, ক্ষমতার চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করার যে ঐতিহ্য বাংলার রয়েছে, সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূল যুব এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন করছেন। তারপর একের পর এক অভিযোগ করা হয়েছে। সায়নী লেখেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসাবশত বাংলার ন্যায্য পাওনা আটকে রেখেছে।’’ পাশাপাশি, বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাড়ি বাড়ি ইডি, সিবিআই পাঠানোর সমালোচনা করেছেন সায়নী। একই সঙ্গে দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের সমস্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তৃণমূলের যুব নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘অমিত শাহের কলকাতা সফরের সময় তাঁর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের জন্যই এই চিঠিগুলি লেখা হয়েছে।’’যুবনেত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজের জন্য ৭০০০ কোটি টাকা প্রাপ্য বাংলার মানুষের। অমিত শাহের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক অনুদানও যেন রাজ্যে আসে, তেমনটাই দাবি করেছেন সায়নী।সায়নীদের বক্তব্য, সারা দেশে বেড়ে চলা বেকারত্ব, ধুঁকতে থাকা দেশের অর্থনীতি এবং বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণ— এই বিষয়গুলি নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। মঙ্গলবার তাই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে তৃণমূলের যুব সংগঠনের সদস্যেরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখেছেন। চিঠির উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যুব তৃণমূল রাজ্য সভানেত্রী লেখেন, “আপনি যখন আপনার দলের কর্মী এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আসন্ন দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন, তখন বাংলার এক জন তরুণ ভোটার হিসাবে আমি কিছু জরুরি প্রশ্নের উত্তর চাই। আশা করছি, কেন্দ্রীয় সরকারের এক জন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি হিসাবে আপনি সেই প্রশ্নের উত্তর দেবেন।’’ এর পর দেশের বেকারত্ব, মোদী সরকারের প্রতিশ্রুতি মাফিক বছরে ২ কোটি চাকরি হয়েছে কি না, প্রশ্ন তোলেন তিনি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য চিঠিতে লেখেন, ‘‘মোদী সরকারের অধীনে ভারতের বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ হয়েছে। হাজার হাজার তরুণ দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা ছাত্র এবং যুব সমাজ আশা করেছিলাম, বছরে দু’ কোটি বেকার চাকরি পাবেন। তাই প্রচুর ছাত্র-যুব নির্বাচনে আপনাদের ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু কথা আপনি রাখেননি।”৫১ হাজার চিঠি প্রেরকদের মধ্যে অনেকে ছাত্রই দাবি করেছেন, তাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে তাঁদের এলাকায় ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনায় বঞ্চিতদের দুর্ভোগের সাক্ষী থেকেছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো অর্থসাহায্য ওই বঞ্চিতদের জীবনে আশার আলো দেখাচ্ছে। এ জন্য তাঁরা অভিষেকের প্রতি কৃতজ্ঞ। চিঠিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে রাজ্যের ‘প্রাপ্য’ দাবি করেছেন তাঁরা।