প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- রেশন দুর্নীতিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে দুষ্কৃতীতাণ্ডবের মুখে পড়া ইডি আধিকারিকরা অবশেষে পৌঁছলেন কলকাতায়। বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হল তাঁদের চিকিৎসা। শুক্রবার সকালে এই ঘটনায় অন্তত ২ জন ইডি আধিকারিকের মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। বিধাননগরের বেসরকারি হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।হাসপাতালে পৌঁছেছেন ইডির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ওদিকে সরবেড়িয়া থেকে আজকের মতো সমস্ত ইডি আধিকারিককে ফিরে আসতে বলা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের হামলার বিরোধীতায় সরব হয়েছে বিজেপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদক্ষেপ চেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদার। এদিকে দুঃখপ্রকাশ করলেও পালটা তদন্তকারীদের নিশানা করতে ছাড়েননি তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ |শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যান ইডির আধিকারিকরা। অনেক ডাকাডাকিতেও কেউ সাড়া না দেওয়ায় বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা শুরু করেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তখনই বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক শ’ নারী- পুরুষ দুষ্কৃতী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় একাধিক ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটে। এর পর গাড়িতে করে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। অভিযোগ গাড়ি থামিয়ে ফের মারধর করা হয় তাঁদের। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে অটো রিকশায় করে এলাকা ছাড়েন তাঁরা। এরপর এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু হয়।
দীর্ঘক্ষণ নিখোঁজ থাকার পর জানা যায়, ধামাখালি ফেরিঘাট দিয়ে পুলিশের বোটে করে কলকাতায় ফিরেছেন ইডির আধিকারিকরা। এর পর বিধাননগরের মণিপাল হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২ জন ইডি আধিকারিকের মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। তাদের সিটি স্ক্যান করে আঘাত কতটা গুরুতর তা দেখা হবে। এছাড়া বাকিদের ওপরেও নজর রাখা হচ্ছে। এদিন হাসপাতালে যান ইডির যুগ্ম অধিকর্তা মিথিলেশ যাদব। আহত সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এনআইএ তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।বিরোধী দলনেতা এদিন এক্স মাধ্যমে ঘটনার নিন্দা করে লিখেছেন, “আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। এই হামলায় রোহিঙ্গারা উপস্থিত ছিল বলেই আমার সন্দেহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যপালকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।” এনআইএ তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।এদিকে আক্রমণকারী অর্থাৎ তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজাহানের অনুগামীদের রোহিঙ্গা বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। গোটা ঘটনাটি জানিয়ে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।এদিকে সন্দেশখালি ইস্যুতে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে নিয়মিত প্ররোচনা চলছে। তৃণমূলকে বেইজ্জত করতে তল্লাশির নামে রোজ রোজ অশান্তির প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হচ্ছেন।”