দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- শেষ পর্যন্ত মিটলো বিচারপতি এজি দ্বন্দ্ব। ‘বন্ধু কিশোর এর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে’, এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের কাছে ক্ষমা চাইলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এজলাসে ডেকে বললেন, ‘‘বন্ধু ক্ষমা করে দিয়ো।’’ সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, তাঁর সঙ্গে এজির সম্পর্ক কত বছরের পুরনো। তিনি যে সে দিন রাগের মাথাতেই এ সব বলেছিলেন, তা-ও জানিয়েছেন বিচারপতি। পাল্টা এজি জানিয়েছেন, সে দিন তিনি যেসব কথা বলেছিলেন, তা-ও বলা উচিত হয়নি। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি মামলায় রাজ্যের এজিকে কিছু মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাল্টা মন্তব্য করেন এজিও। সেই নিয়েই এ বার এজি কিশোরের কাছে ক্ষমা চাইলেন বিচারপতি। সোমবার এজলাসে এজিকে ডেকে বিচারপতি বলেন, ‘‘সে দিন আমি রাগের মাথায় অনেক কিছু বলেছি। বারের (বার অ্যাসোসিয়েশন) আইনজীবীদের সকলের তা জানা উচিত। আমি আমার বন্ধুর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’’ প্রসঙ্গত, বিচারপতির ওই মন্তব্যের পর সরব হয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীদের একাংশ। তাঁরা দাবি করেছিলেন এজির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বিচারপতিকে। সেই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে চিঠি দেন তাঁরা। এজি-র উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই মন্তব্য ‘কলকাতা হাই কোর্টের অবমাননা’ বলেও চিঠিতে অভিযোগ করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ।
মঙ্গলবার বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা জানেন না কিশোর আমার কত উপকার করেছে। এমনও হয়েছে কিশোর এবং আমার আর এক বন্ধু না থাকলে আমি মরেই যেতাম!’’সোমবার এজলাসে বসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার বন্ধু কিশোরের কাছে আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে। আমার কথায় তিনি আঘাত পেয়ে থাকতে পারেন।’’ওই মন্তব্যের পরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যান রাজ্যের এজি। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমি আপনাকে অনেক কিছু বলেছি। আমি আপনাকে বহু বছর ধরে চিনি। প্রায় ৩৭ বছর হবে আমাদের পরিচয়। আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি খুবই দুঃখিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সে দিন আমি যা বলেছিলাম আপনি পাল্টা তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। তবে আমার কথাগুলো ছিল ক্রোধের বশে। আপনার উদ্দেশে কিছু বলার মানসিকতা আমার ছিল না।’’