দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় ফের গ্রেফতার করা হয়েছে ‘মিডিলম্যান’ প্রসন্ন রায়কে। আগে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন,পরে জামিন পান। কিন্তু এবার ইডি তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এর আগে বারবার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই অভিযোগ তুলেছিল, অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন প্রসন্ন। মঙ্গলবার সেই একই বিষয় আদালতে জানাল ইডি। ইডির দাবি, ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগপত্র দিয়েছেন প্রসন্ন রায়। ১০০ কোটির উপরে টাকা তুলেছেন চাকরি দেওয়ার নামে।নিয়োগ দুর্নীতিতেই আগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তারির পর সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান প্রসন্ন রায়। সোমবার তলবের পর প্রসন্নকে গ্রেপ্তার করে ইডি। মঙ্গলবার তাঁকে ব্যাঙ্কশালে ইডির বিশেষ আদালতে তোলা হয়। প্রসন্নর জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা। প্রসন্নর গ্রেপ্তারির কারণ ইডি স্পষ্টভাবে না দেখানোর ফলে তা আইন মেনে হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। ইডির আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায় তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেন। দুপক্ষের বক্তব্য শুনে প্রসন্ন রায়কে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইডির হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।গতকাল আদালতে ইডি-র আইনজীবী সওয়াল করেছেন, ৯৫২ জন প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৩ জন প্রার্থী প্যানেল বাতিল হওয়ার পরও চাকরি পেয়েছেন। মোট ২ হাজার ৮১ জনকে প্রসন্ন রায় চাকরি দিয়েছে অর্থের বিনিময়ে। এর মধ্যে নবম -দশমে ১ হাজার ১৩৫ এবং একাদশ-দ্বাদশ ৯৪৬ জনের চাকরি হয়েছে। এদিন ইডি আদালতে এও জানিয়েছে, প্রসন্নর বাড়ি অফিস তল্লাশি করে ৪৯২টি দলিল পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে অফিস থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৩৯২টি জমির দলিল। সেই জমিগুলি ২০১৬-২০২১ সালে কেনা হয়েছে পরিবারের নামে। জমির ভ্যালু কম দেখানো হয়েছে। প্রসন্ন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ৯০টির বেশি সংস্থা রয়েছে। ২০০ বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেখানে প্রচুর টাকা ঢুকেছে। এরপরই ইডি তাঁকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে।যদিও, পাল্টা প্রসন্ন রায়ের আইনজীবী আদালতে যে কোনও শর্তে তাঁর জামিনের আবেদন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের নামে ৫০টির বেশি সংস্থা আছে এটা যেমন সত্যি, তেমনই তিনি একজন নামকরা ব্যবসায়ী। ১০ কোটি টাকার উপরে আয়কর জমা করেন এটাও সত্যি। এর পাশাপাশি তাঁর আইনজীবী জানিয়েছে, প্রসন্নর বিরুদ্ধে তল্লাশি চালিয়ে কোনও টাকা মেলেনি। কিছু জমির নথি পেয়েছে। তাও বৈধভাবে কেনা।