প্রসেনজিৎ ধর:-দেওয়ালে লেখা, ‘আমাদের একসঙ্গে জ্বালাবে।’ ঘরের মধ্যে বিছানার উপর দম্পতিকে পাওয়া গেল প্রাণহীন অবস্থায়। খাটের উপর উদ্ধার স্বামীর ঝুলন্ত দেহ। আর ওই বিছানার উপর থেকেই মিলল স্ত্রীরও নিথর দেহ। সাত সকালে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে অন্ডালের উখড়ার শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারির ভুয়াপাড়ায়। ছেলেই প্রথম দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাবা-মাকে এই অবস্থায় দেখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অন্ডাল থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। কী কারণে এই ঘটনা, তার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।অন্ডাল থানার উখড়া শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারি ভুয়াপাড়া সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বছর সাতচল্লিশের নীলকণ্ঠ বাউড়ি ও তাঁর স্ত্রী ৩৮ বছরের লিলি বাউড়ি। তাদের কন্যাসন্তানের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একমাত্র পুত্র সন্তান রোহিত বাউড়ি মা-বাবার সঙ্গে থাকলেও রাতে প্রায়শই পাশে মামারবাড়িতে রাতে ঘুমতে যেত। বৃহস্পতিবারও রোহিত মামারবাড়ি গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে বাড়ি ফিরে অনেক ডাকাডাকি করেও মা-বাবার সাড়া পাননি। এরপর প্রতিবেশীদের ডেকে দরজা ভাঙা হয়। দরজা খুলতেই দেখা যায়, নীলকণ্ঠ গলায় গামছা দিয়ে ঝুলছেন, স্ত্রী লিলি গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় বিছানায় পড়ে। ঘরের দেওয়ালে বড় বড় করে লেখা, ‘আমাদের একসঙ্গে জ্বালাবে’।জানা গিয়েছে, নিত্যদিন নীলকণ্ঠ ও লিলির মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হত। দুজনের এই অশান্তি প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রী লিলিকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে খুনের পরেই স্বামী নীলকন্ঠ বাউড়ি গলায় দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হন। তাদের একমাত্র সন্তান রোহিত বাউড়ি জানান, “আমি পাশেই মামারবাড়িতে রাতে ঘুমাতে যাই। সকালে এসে অনেক ডাকাডাকির পরেও দরজা খুলছে না দেখে আমি প্রতিবেশীদের ডাকি। সবাই এসে দরজা খুলে দেখতে পাই, বাবা ঝুলন্ত অবস্থায় এবং মা খাটের মধ্যে পড়ে আছে। পুলিশকে খবর দিয়েছি। পুলিশ দ্রুত আসে। কাল অশান্তি হয়েছিল কিনা আমি জানি না।” লিলি বাউড়ি উখড়া বাজারের একটি দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কী কারণে এই চরম সিদ্ধান্ত নীলকন্ঠ বাউড়ির? ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে অন্ডাল থানার পুলিশ।