প্রসেনজিৎ ধর, হুগলি :-পাণ্ডুয়ায় বোমা ফেটে মৃত্যু হল এক কিশোরের। গুরুতর জখম আরও দুই কিশোর। তাদের মধ্যে একজনের হাত উড়ে গেছে বলে জানা গেছে। পাণ্ডুয়া হাসপাতাল থেকে তাদের চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিন কেঁপে ওঠে পাণ্ডুয়ার নয়া মোড় এলাকা। মৃত্যু হয়েছে রাজ বিশ্বাস নামক এক খুদের। আহত আরও দুই জন। ঘটনার তদন্তে নেমে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে পুলিশ। এরপরেই উঠে আসে নয়া তথ্য।হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার জানান, আহত এক কিশোরের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলা অভিযোগকারীর প্রাক্তন স্ত্রী। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে নেতাজি পল্লিতে বোমা রাখা হয়েছিল বলে সন্দেহ পুলিশের। সেই বোমাকে বল ভেবে খেলতে যায় তিন কিশোর। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় একজনের আহত হয় দু’জন। আহতদের মধ্যে এক কিশোরের বাবা সুকদেব বল্লভের অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর পাড়ারই এক যুবককে বিয়ে করেন তাঁর স্ত্রী। বিহারে হাতুড়ে চিকিৎসকের কাজ করেন ওই যুবক। নেতাজি পল্লিতে তাঁর দোতলা বাড়ি তালা দেওয়া। মাস পাঁচেক আগে তাঁরা বিহারে চলে যান। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেও সন্তানকে দেখতে আসতেন সুকদেবের প্রক্তন স্ত্রী।পরশু দাঁতের চিকিৎসার জন্য পান্ডুয়া আসেন তিনি। এদিন সকালে বোমা বিস্ফোরণের পর হাসপাতালেও যান ছেলেকে দেখতে। তাঁর গ্রেফতারের ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরা। বোমা রাখা বা বিস্ফোরণে তার কতটা হাত রয়েছে অভিযুক্তের, তা বুঝে উঠতে পারছেন না মহিলার বাপের বাড়ির গ্রাম সবুজ পল্লির বাসিন্দারা।তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়েছে। মহিলার বর্তমান স্বামীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে, সেখান থেকে আরও দুটি বোমা উদ্ধার হয়।২০ মে পঞ্চম দফায় ভোট হুগলিতে। তার আগে বোমা ফেটে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় জেলা। বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভোটের দিন সন্ত্রাস করতেই জায়গায় জায়গায় বোমা মজুত করছে তৃণমূল। আর অজান্তেই তার বলি হল নিরীহ কিশোর। মানুষ নিশ্চই ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবে।” শাসকদলের পাল্টা দাবি, ভোটে পরাজয় নিশ্চিত জেনে সন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। তারই জেরে এই মর্মান্তিক ঘটনা।