নিজস্ব সংবাদদাতা :-বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে নিউটাউনের যে আবাসনে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে একটি সবুজ ট্রলি দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সেই ট্রলিতেই সাংসদের দেহাংশ ভরে নেওয়া হয়েছিল।নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনে বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার উল আজিমের খুনে এবার সামনে এল আরও শিউরে ওঠার মতো তথ্য৷ তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি-র দাবি, দেহ লোপাটের আগে মৃত সাংসদের দেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়া হয়৷ এর পর মাংস, হাড় ছোট ছোট টুকরো করে তিনটি প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে সম্ভবত ভাঙড়ের পোলেরহাট এলাকায় গিয়ে খালে ফেলে দেওয়া হয়৷এই কাজে বাংলাদেশ থেকে জিহাদ নামে এক কসাইকে প্রায় দু মাস আগে ভাড়া করে আনা হয়েছিল৷ ঘটনার দিন, আগে থেকেই ওই ফ্ল্যাটে লুকিয়ে ছিল আততায়ীরা৷ বাংলাদেশের সাংসদ ফ্ল্যাটে ঢুকে বাথরুম থেকে বেরনোর পরই প্রথমে ক্লোরোফর্ম দিয়ে ওই সাংসদকে বেহুঁশ করা হয়৷ এর পরই বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে খুন করা হয়৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রথমে ভারী বস্তু দিয়ে সাংসদের মাথায় আঘাত করে আততায়ীরা৷ তার পর রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় দেহ লোপাটের প্রস্তুতি৷আবাসনের ১ মিনিট ৯ সেকেন্ডের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বাঁ দিকের একটি ঘর থেকে ট্রলি নিয়ে বেরোচ্ছেন এক অভিযুক্ত। ডান দিকে লিফ্টের বোতাম টিপে অপেক্ষাও করেন তিনি। সঙ্গে আরও এক জন ছিলেন। তাঁর হাতে আরও তিনটি ছোট ছোট ব্যাগ ছিল। লিফ্ট এলে তাতে ট্রলি নিয়ে উঠে পড়েন দু’জনই।ওই ফুটেজেই অন্য একটি দৃশ্যে দেখা গিয়েছে, তিন জন বাঁ দিকের ঘরটিতে ঢুকছেন। ঘরে ঢোকার আগে জুতো খুলে রেখে দিচ্ছেন দরজার পাশের জুতো রাখার তাকে। এই ফুটেজে খুনের অন্যতম অভিযুক্ত আমানোল্লাকে দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ ইতিমধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়াও ফুটেজে দেখা গিয়েছে কসাই জিহাদ হাওলাদারকে। মুম্বই থেকে তাঁকে ডেকে এনেছিলেন অভিযুক্তেরা। তাঁকে বৃহস্পতিবার বনগাঁ থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।জিহাদকে শুক্রবার সকালে বারাসত আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালত তাঁকে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে।গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য। উঠেছিলেন বরাহনগরের এক বন্ধুর বাড়িতে। দু’দিন পর সেখান থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। সিআইডি জানতে পেরেছে, মধুচক্রের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এক মহিলার ফাঁদে ফেলে তাঁকে নিউ টাউনের আবাসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই খুন করা হয় তাঁকে। ধৃত কসাই গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, তিনি বাকিদের সঙ্গে মিলে খুনের পর সংসদ সদস্যের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন। তার পর ছাল ছাড়িয়ে হলুদ মাখানো হয় তাতে। পরে সেগুলি বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।