দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে আবারও সাংসদ হলেন মহুয়া মৈত্র । প্রায় ৬০ হাজার তিনি পরাজিত করেন তাঁর নিকটবর্তী বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে। সকাল থেকে কৃষ্ণনগর লোকসভার গণনা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র ও বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় একসঙ্গে দেখা যায়। একসঙ্গে ছবিও তোলেন তাঁরা।এবারের লড়াইটা ছিল মর্যাদা রক্ষার। লোকসভা থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ‘মিথ্যা অভিযোগ’ এনে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল বলে বারবার আওয়াজ তুলেছিলেন তিনি। সংসদে তিনি একাধিক ইস্যুতে সোচ্চার থাকেন। সেই রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়।তার জবাব এবারের ভোটের লড়াইয়ে দিলেন তিনি | ভোটের মুখে নানাভাবে জটিলতার মুখে পড়তে হয়েছিল মহুয়াকে। প্রথমে তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সাংঘাতিক অভিযোগ তুলে তাঁকে বহিষ্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেয় লোকসভার এথিক্স কমিটি। তবে লড়াই থেকে কিন্তু মহুয়া সরেননি।এরই মধ্যে মহুয়া যখন শেষবেলায় দাপিয়ে প্রচার করছেন, সেই সময় আবার মহুয়ার অফিসে এবং কলকাতায় হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। একদিকে তাঁর বিরুদ্ধে যখন সিবিআই তদন্ত করছিল, তখন নতুন করে চাপ তৈরি হয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির দায়ের করা মামলায়। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের মামলা দায়ের করে ইডি। তারই সূত্র ধরে রাজ্যে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। উনিশের তৃণমূলের মূল ভরসার জায়গা ছিল চাপড়া, পলাশিপাড়া, নাকাশিপাড়া ও কালীগঞ্জ বিধানসভা। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভাগুলিতে ভালো লিড পেয়েছেন কিন্তু এবার এই বিধানসভাগুলিতেও সমস্যা ছিল। পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এখন জেলে। তেহট্ট, চাপড়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মহুয়ার কপালে ভাঁজ ফেলেছিল।বিজেপি প্রার্থী রাজ পরিবারের সদস্যা অমৃতা রায়ও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল মহুয়ার কাছে। কৃষ্ণচন্দ্রের আবেগ বড় প্রভাব ফেলেছিল কৃষ্ণনগরের মানুষদের মধ্যে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মহুয়ার নিজস্ব লড়াকু মনোভাব। ভোটের যুদ্ধে নেমে আগেও দেখিয়েছেন, এবারও বুঝিয়েছেন যে, তিনি যুদ্ধটা যুদ্ধের নিয়ম মেনেই করতে জানেন। ভোটের যাবতীয় অঙ্ককে স্বীকার করেও মহুয়া তা আদায় করে নিতে পেরেছেন নিজস্ব দক্ষতায়।