প্রসেনজিৎ ধর, হুগলি :- রাজনীতির ময়দানে নতুন হলেও প্রচারে এতটুকু ফাঁক ছাড়েননি রচনা বন্দোপাধ্যায় । যদিও নানা সময় বিতর্কিত বা বেফাঁস মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে থেকেছেন তবুও নিজের উপর দিয়ে লাইমলাইট সরতে দেননি। আর অবশেষে এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর শেষ হাসি হাসলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।গতবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছ থেকে হুগলি আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। সৌজন্যে তারকা প্রার্থী অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এবার ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা‘ তুলল তৃণমূল। অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জীকে প্রার্থী করে হুগলি পুনরুদ্ধার করল মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল।
আগেই ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা ছিল লকেটের। ছিল রাজনীতির অভিজ্ঞতাও। অন্যদিকে রচনা নতুন প্রার্থী। তাই তাকে হারানোর ব্যাপারে প্রত্যয়ী ছিলেন লকেট। কিন্তু ফলাফল হলো উল্টো। অভিজ্ঞ প্রার্থী লকেটকে হারিয়ে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ হয়ে থাকলেন রচনা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী,এদিন রচনা ৬৪ হাজার ৯৭২ ভোটে তিনি তাঁর একদা সহকর্মী তথা বন্ধু এবং প্রতিদ্বন্দ্বী লকেটকে পরাজিত করলেন।বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় গত ভোটে জেতার পর থেকেই তাঁকে আর তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রে তেমনভাবে দেখা যায়নি বলে একটা ক্ষোভ জমেছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। এমনকী পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল লকেটকে। তাঁর নামে নিখোঁজ পোস্টারও পড়ে বহু জায়গায়। এছাড়াও বিজেপির আরও বড় মাথা ব্যাথার কারন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে লকেট নিজের নাম নিজেই ঘোষণার পরেই দলের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাই এবার রচনা বন্দোপাধ্যায়কে তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই কিছুটা হলেও হুগলিতে পদ্মপ্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ব্যাকফুটে ছিলেন।
৪ জুন ভোট গণনা চলার সময় প্রথমে বেশ অনেকটা পিছিয়ে পড়লেও পরে সেই গ্যাপ যে কেবল রচনা মেকআপ করেন সেটাই নয়, একই সঙ্গে তিনি বিপুল ভোটে এগিয়ে যান।এদিন সকালে গণনা কেন্দ্রে ঢোকার আগে রচনা জানিয়েছিলেন তিনি জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। একই সঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে তিনি শুভেচ্ছা জানাতেও ভোলেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দু’ বার সাংসদ হন রত্না দে নাগ। তবে উনিশের লোকসভা ভোটেই বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বিরাট মার্জিনে হারান রত্নাকে। অতঃপর রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁধেই পুরনো আসন পুনরুদ্ধারের গুরুদায়িত্ব সঁপে দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা। ফলে এই পিচে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর লড়াই কঠিন ছিল, তবে বাস্তবে যে তিনি ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন রচনা বন্দোপাধ্যায় |