প্রসেনজিৎ ধর:- একের পর এক রেল দুর্ঘটনার জেরে ‘রেল যাত্রাকে যম যাত্রা’র সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন রেলযাত্রীদের অনেকে। সোমবার গভীর রাতে ঝাড়খণ্ডের ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে আবারও প্রশ্নের মুখে রেল। গত ৬ সপ্তাহে একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু এবং শতাধিকের জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে গতবছর ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এমন পরিস্থিতিতে রেলের পরিষেবা এবং যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে যখন দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠছে ঠিক তখনই বড় দাবি করে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর দাবি, কংগ্রেস জমানার তুলনায় তাঁর জমানায় রেলের বাজেট ৮ গুণ বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে বাজেট সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে একথা বলেন মোদী।সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর পৌনে চারটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে জামশেদপুর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে বডাবাম্বুতে। লাইনচ্যুত হয় অন্তত ১৮টি বগি। লাইনচ্যুত হওয়া ১৮টি কামরার মধ্যে ১৬টিই যাত্রিবাহী কামরা। এছাড়াও বেলাইন হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগের কামরা এবং প্যান্ট্রি কার। এই ট্রেনটির অদূরেই লাইনচ্যুত হয় আরেকটি মালগাড়িও। সিংভূম জেলার পুলিশ আধিকারিক জানান দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা বেড়ে ২০।রেলের এই বিবৃতির পরেই প্রশ্ন উঠছে, মালগাড়ি দুর্ঘটনার খবর পেয়েও কেন মুম্বই মেলকে এগিয়ে যাওয়ার সংকেত দেওয়া হল? কেনই বা গতি কমাতে বলা হল না যাত্রীবাহী ট্রেনকে? সূত্রের খবর, শেষ পেরনো স্টেশন থেকে মুম্বই মেলের ঘটনাস্থলের দূরত্ব মাত্র পাঁচ মিনিট। তাহলে কেন সতর্ক করা হল না মেল ট্রেনের চালককে? প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় স্টেশনমাস্টারের ভূমিকায়। চক্রধরপুরের দুর্ঘটনায় ফের প্রকট হল রেলের গাফিলতির অভিযোগ। এক দশক আগেও, আলাদা বাজেট বরাদ্দ ছিল রেলের জন্য। মোদী সরকারের আমলেই তা হারিয়েছে রেল মন্ত্রক। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, এবার নির্মলা সীতারামনের বাজেট বক্তৃতায় মন্ত্রক হিসাবে বরাদ্দে এক বার নামও উঠে আসেনি রেলের! এই পরিস্থিতিতে রেলের বাজেট নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গোপনীয়তার অভিযোগ উঠেছে বিরোধীদের তরফে। পাশাপাশি, প্রশ্ন উঠেছে একের পর এক রেল দুর্ঘটনা নিয়ে। তাঁর তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রিত্বে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় সদ্য মারা গিয়েছেন বহু যাত্রী। দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় বড় রেল দুর্ঘটনার দিন মোদীর এমন মন্তব্য ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে।