প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :-চিঠি-পালটা চিঠি চলছে। দুপক্ষই কার্যত অনড়। আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা স্বাভাবিকভাবেই বেশ কয়েকটি দাবির কথা জানিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই দাবির উপরেই তাঁরা আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। তবে এবার রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে আহ্বান করলেন খোলা মনে আলোচনায় আসুন। তবে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বৈঠকে অন্তত ৩০জনকে থাকতে দিতে হবে।২৯ ঘণ্টা ধরে ধর্নায় আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। ঘড়ির কাঁটা যত এগোচ্ছে, তত ভিড় বাড়ছে অবস্থানস্থলে।বুধবার সন্ধেয়ও নবান্নে বৈঠকে যোগ দিলেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা। পরিবর্তে ফের নতুন করে শর্ত বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্ত ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেই মত মুখ্যসচিবের। খোলা মনে বৈঠকে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে বলেই মনে করছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।সূত্রের খবর, এদিন শিল্প সংক্রান্ত বৈঠকের শেষে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই বৈঠকেই রাজ্যের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জুনিয়র চিকিৎসকরা আলোচনায় বসার জন্য যে যে শর্ত চাপিয়েছেন, তা জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে৷ সূত্রের খবর, সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা কেন এত জেদ করছে? ওরা যা বলবে সব মানতে হবে? আমি তো ওদের জন্য সব সময় সময় দিতে রাজি। সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার তো সবাইকে মানতে হবে। ওদেরকে আরও একবার বোঝাও।’মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠকের পরই এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ সেই বৈঠক থেকেই স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, আগে থেকে চাপানো কোনও শর্ত মেনে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে না রাজ্য সরকার৷চন্দ্রিমা আরও বলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তাঁরা রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন। এভাবে রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয় না। আমরা চাই, আপনারা রাজনীতির খেলা ছেড়ে খোলামনে আলোচনায় আসুন।তিনি বলেন, ‘নবান্নতে মেল এল ভোর তিনটেয়। কোনও সিএমও-তে কি এটা মেল করার সময়? এটা কি স্বাভাবিক? তাহলে কি এর পিছনে রাজনীতি লুকিয়ে আছে? আসলে রাজনীতি লুকিয়ে আছে বলেই এই ধরনের ঘটনা আমরা দেখছি। এর পরে আজ দুপুর তিনটেয় মেল করে ৬টায় আসার কথা বললেন মুখ্যসচিব। আড়াই ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল ওঁদের। ১২-১৫ জনকে আসতে বলা হল। সেই মেলের উত্তর এল দু’ঘণ্টা পরে, একাধিক শর্ত-সহ। লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে, মাননীয়াকে থাকতে হবে, ডাক্তারদের যা দাবি আছে সেগুলো নিয়েই কথা বলতে হবে।’