দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বৃহস্পতিবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে ফের একবার ডিভিসি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দুষলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি পাঁশকুড়ার প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন। ডিভিসি যেভাবে জল ছাড়ছে সেই প্রসঙ্গে উষ্মা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষকে এ ভাবে ডোবালে ডিভিসির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।’’ শুধু তা-ই নয়, এই বিষয় নিয়ে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।মমতার বক্তব্য, ”রাজ্যকে বিপদে ফেলতে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করা হচ্ছে। আর গোটা বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। বন্যার জন্য দায়ী ডিভিসি। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে পরিকল্পিতভাবে বাংলাকে ডোবাচ্ছে।” তিনি পাঁশকুড়ায় দাঁড়িয়ে এও বলেন, ”ডিভিসির জলধারণ ক্ষমতা আগের থেকে ৩৬ শতাংশ কমে গেছে। ড্রেজিং না করার জন্যই এমন হয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেয় না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেও কোনও লাভ হয়নি।” গত কয়েকদিনের টানা বৃ্ষ্টি এবং মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া জলের ফলে হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই জল ছাড়া নিয়েই মমতা বলেন, এবার এত জল ছাড়া হয়েছে যা আগে কখনও হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর গলায় আবার শোনা যায় ‘ম্যান মেড বন্যা’র কথা। তিনি বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড থেকে জল ছাড়া হয়েছে। কেন কেন্দ্রীয় সরকার, ডিভিসি ড্রেজিং করে না? ডিভিসির জলে কেন বাংলা ডুববে, আমরা জানতে চাই। কৈফিয়ত চাই।’’মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ যে জায়গায় জল ঢুকেছে সেগুলি সকালেও শুকনো ছিল। এত বার বলার পরেও জল ছাড়া বন্ধ করছে না ডিভিসি।” তাঁর অভিযোগ, পাঁশকুড়ার পাশাপাশি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা প্রভৃতি এলাকার বহু জায়গা আজ নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে জানান, “যত দ্রুত সম্ভব দুর্গত এলাকার মানুষদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসুন। যত দিন পর্যন্ত না তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন তত দিন রাজ্য সরকার তাঁদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করবে।”দু’দিন ধরে রাজ্যের বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার তিনি হাওড়া এবং হুগলির বানভাসি এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন। ওই দিনও মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে। ‘ম্যান মেড বন্যা’র প্রসঙ্গও উঠে এসেছে তাঁর মন্তব্যে। বৃহস্পতিবারও সেই একই অভিযোগ শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে।