প্রসেনজিৎ ধর,কলকাতা :- পুজো কার্নিভালের দিনই দ্রোহের কার্নিভালের ডাক। প্রতিবাদী চিকিৎসকদের এই কর্মসূচিতে বাধা দিতে কার্যত ধর্মতলার আশেপাশের ৯ জায়গায় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ। তার বিরোধিতায় চিকিৎসকদের সংগঠন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতেই মিলল সমাধান। মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ জরুরি ভিত্তিতে শুনানির পর সাফ জানিয়ে দিল, কলকাতা পুলিশের ওই বিজ্ঞপ্তি ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’। রানি রাসমনি অ্যাভিনিউতে দ্রোহের কার্নিভাল হতে কোনও বাধা নেই। যাঁরা যোগ দিতে চাইবেন, তাঁদের আটকাতে পারবে না পুলিশ। হাই কোর্টের এই নির্দেশের পরই এলাকা থেকে পুলিশের ব্যারিকেড সরানো শুরু হয়েছে| স্লোগানে, গানে, নাচে মুখর রাজপথ। গাওয়া হচ্ছে শিকল ভাঙার গান। প্রতিবাদের এই মিছিলে শামিল হয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘যত দিন না বিচার পাচ্ছি, আমাদের কার্নিভাল চলবে।’’ আর এক আন্দোলনকারী বললেন, ‘‘এর চেয়ে বড় কার্নিভাল আর কিছু হয় না। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল আমাদের কার্নিভালে আসা।’’এসেছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও। তিনি বললেন, ‘‘বাকি ব্যারিকেডগুলি খোলা হলেও রেড রোডের দিকের ব্যারিকেডটি রাখার প্রস্তাব আমিই দিয়েছি। যাতে বাইরে থেকে কেউ এসে ঝামেলা না করতে পারেন।’’দ্রোহের কার্নিভালে শামিল হয়েছেন আট থেকে আশি সকলেই। প্রতিবাদের নানা ধরন দেখল মহানগরীর রাস্তা। কেউ জ্বালিয়েছেন মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট। কেউ আবার ওড়াচ্ছেন কালো বেলুন। আগেই সরেছে পুলিশের ব্যারিকেড। এ বার হাতে হাত রেখে ‘জনগণের ব্যারিকেড’ গড়লেন মানুষ। ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার জানালেন, চার দিক থেকে ডোরিনায় এসে জুড়বে মানববন্ধন। ডোরিনা ক্রসিংয়ে চারটি রাস্তা বরাবর চারটি মানববন্ধন হবে।এদিনের শুনানিতে দ্রোহের কার্নিভালের ডাক দেওয়া জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ”দ্রোহের কার্নিভাল আয়োজন করতে চেয়ে গত ১১ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। রেড রোড থেকে খানিকটা দূরে অর্থাৎ পুজো কার্নিভালে কোনওরকম অসুবিধা না করেই এই কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। আর ডাক্তাররা গুন্ডা নন যে তাঁদের দ্বারা কোন ক্ষতি হবে। শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের কর্মসূচি হবে, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।” তাতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য ছিল, ওই কর্মসূচির তাৎপর্য কী, তা আয়োজকরা জানাননি। ফলে তা অস্পষ্ট ছিল।দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুর বলেন, ”শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে সকলের। আদালত বার বার তা বলেছে। এই কার্নিভাল করতে বাধা দেওয়া যাবে না।” উচ্চ আদালতের এই রায় শুনে উচ্ছ্বসিত চিকিৎসকরা।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal