প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- শ্যালিকাকে নিয়ে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিল ভগ্নিপতি। সমুদ্রের ধারে একান্তে দু’জনের ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পরই পরিবারে শুরু হয় গোলমাল। ভগ্নিপতির নম্বর ‘ব্লক’ করে দেন শ্যালিকা। আর তারই জেরে দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট কলোনির একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে খুন হন খাদিজা বিবি। গল্ফগ্রিন এলাকায় মহিলার কাটা মুণ্ড রহস্যের তদন্তে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ‘সিট’।পুলিশ অফিসাররা ফেসবুকের ওই ছবিগুলি উদ্ধার করে খতিয়ে দেখেন। যে নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই বাড়িতেই শ্যালিকার দেহ কেটে তিন টুকরো করে ভগ্নিপতি আতিউর বলে অভিযোগ। মাথা একটিতে, শরীরের উপরের অংশ আর একটিতে এবং নীচের অংশ আলাদা বস্তায় ভরে মাঝরাতেই ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির পিছনে ফেলে দেয় ভগ্নিপতি। শ্যালিকার কাটা মাথা প্লাস্টিকে মুড়িয়ে ফেলা হয় গ্রাহাম রোডের আবর্জনায়। তদন্ত নেমে পুলিশ গ্রেফতার করে ভগ্নিপতিকে। মগরাহাটের বাসিন্দা আতিউর লস্কর প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ছিল শ্যালিকাকে। ধৃত স্বীকার করেছে, শ্যালিকা খাদিজার সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিচ্ছেদ হওয়ার পর দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। আতিউর খাদিজার ছোট বোনের বর।এক মাস আগে তাঁরা কয়েকদিনের জন্য দিঘায় বেড়াতে যান। সমুদ্রের ধারে দু’জনে মিলে প্রচুর ছবি তোলেন। সপ্তাহ দু’য়েক আগে খাদিজাকে কিছু না জানিয়েই ফেসবুকে ছবিগুলি পোস্ট করে দেয় আতিউর। সেই ছবিগুলি দেখার পরই আতিউরের স্ত্রী অর্থাৎ বোনের সঙ্গে খাদিজার প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এর পরই আতিউরের নম্বর ব্লক করে দেন খাদিজা। এমনকী, পুরনো সিমকার্ড ফেলে দিয়ে নতুন সিমকার্ডও নেন তিনি। কয়েকদিন ধরে শ্যালিকার সঙ্গে আতিউরের কোনও যোগাযোগ ছিল না। আতিউর যে প্রোমোটারের অধীনে রঙের মিস্ত্রির কাজ করত, সেই প্রোমোটারের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন খাদিজা। ওই আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আতিউর খাদিজার নতুন নম্বর জোগাড় করে।ওই নম্বরে শ্যালিকাকে ফোন করে আতিউর। আর খাদিজার কাছে ক্ষমা চায় সে। তাতে খাদিজাকে আতিউর ডেকে পাঠায়। অনেক কাকুতি–মিনতি করেই খাদিজাকে রিজেন্ট কলোনির নির্মীয়মাণ বাড়িতে নিয়ে যায় আতিউর। ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার কেউ ছিলেন না। ওই ফাঁকা বাড়িতে শ্যালিকাকে ঘনিষ্ঠভাবে পেতে চায় আতিউর। কিন্তু শ্যালিকা খাদিজা সরাসরি জানিয়ে দেন, আর এভাবে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজি নয় সে। পুরনো কথা তুলে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখনই শ্যালিকার মাথায় আঘাত করতেই সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন খাদিজা। তখন মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা টিপে খুন করা হয়। আর রঙ করার পাত দিয়ে দেহ টুকরো করে আতিউর বলে পুলিশ সূত্রে খবর।