দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- ২০১৬ সালের গোটা এসএসসি প্যানেল বাতিল। যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও যাদের চাকরি গিয়েছে তাঁরা এবার কী করবেন?এবার মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সব মিলিয়ে ২৫,৭৫২জনের চাকরি গিয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, আমরা যোগ্য-বঞ্চিত যাঁরা আছেন, তাঁদের পাশে আমরা থাকব। মানবিকভাবে থাকব। রাজনৈতিকভাবেও থাকব। যেটা বলা হচ্ছে টেইন্টেড এবং আনটেইন্টেড, বা একজনের বেতন ফেরত দেওয়া হবে আর একজনের বেতন ফেরত দেওয়া হবে না, এই কথাগুলো তো আমার কথা নয়। এগুলো মহামান্য বিচারপতির রায়ের প্রতিটি পাতায় আছে। আঠাশ নম্বর অণুচ্ছেদে স্পষ্ট করে আছে। অর্থাৎ যা বলা হচ্ছে, তা তো এসএসসির দেওয়া তথ্য থেকেই বলা হয়েছে। অর্থাৎ যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা যে এসএসসি ভাগ করতে পারেনি, সেই কথাটা ঠিক নয়। এটা ঠিক সেই তথ্যে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেননি। কিন্তু নিশ্চিতভাবে প্রধান বিচারপতির রায়ের পর আমরা বুঝতে পারছি। এবং যাঁরা যোগ্য-বঞ্চিত তাঁদের প্রতি একটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি যাতে সব তরফ থেকে বেরোয়, আমি সেই আবেদনও করব। আমি শুধু একটাই কথা বলব, মাননীয় মুখমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখুন।”সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শেষমেশ চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীর হতাশায় ভেঙে পড়ার ছবি দেখা গিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী কাল সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, “যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা ৭ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে একটি সভা ডেকেছেন। আমি জানিয়েছি, তাঁদের সভায় যাব। তবে আবারও বলছি, মানসিক চাপ নেবেন না, ধৈর্য্য হারাবেন না।”এদিকে চাকরি যাওয়া শিক্ষকদের কার্যত একেবারে দিশেহারা অবস্থা। একদিকে আগামী দিনে কী হবে তা ভেবে উঠতে পারছেন না তাঁরা।বহু শিক্ষক রয়েছেন যাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় পাশ করেছিলেন। দীর্ঘ পরিশ্রম করে তাঁরা শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন। এরপর সংসার করেছেন। বাড়িতে কারোর বৃদ্ধ বাবা মা, কারোর রয়েছে সন্তান। এর উপর রয়েছে ব্যাঙ্ক লোনের ইএমআই, রোজকার সংসার খরচ। কীভাবে সামাল দেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তার উপর পাড়ায়, গ্রামে, শহরে শিক্ষক হিসাবে যে সম্মান ছিল তা রাতারাতি একেবারে ধুলোয় মিশে গিয়েছে। কীভাবে সেই সম্মান ফিরে পাবেন সেটাও বুঝতে পারছেন না। তবে শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য় জানিয়েছেন যোগ্য ও বঞ্চিতদের পাশে থাকবে সরকার। মুখ্যমন্ত্রীও আশ্বাস দিয়েছেন।
