দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে এসএসসি মামলায়। বেতন ফেরত দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে সেই নির্দেশে। কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেই এই নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এবার পাহাড়ের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৩০০-র বেশি শিক্ষকের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে সময়ও বেঁধে দিয়েছে আদালত। এই প্রশ্ন তুলে বিচারপতির কড়া নির্দেশ, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের বেতন বন্ধ করে দিতে হবে। বিচারপতি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের কাছে জানতে চান, “রাজ্য বন্ধ করবে, নাকি আমি বেতন বন্ধের নির্দেশ দেব ?” এই বিষয়টি নিয়ে নির্দেশের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল । জিটিএ এরিয়াতে কোনও পরীক্ষা ছাড়াই প্রাথমিক স্তরে ৭০০ জনেরও বেশি শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছিল । যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য ছিল, “দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে পড়াচ্ছিলেন এই রকম শিক্ষকদের স্থায়ী করা হয়েছিল । এখানে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকতে পারে । কিন্তু দুর্নীতি হয়নি।”রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মাঝেই ২০২৪ সালে পাহাড়ের স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা জিটিএ-তে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেখানেও বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। সোমবার সেই মামলায় সিআইডি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয় উচ্চ আদালতে। তা দেখেই বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রীতিমতো খেপে যান। ভর্ৎসনার সুরে বলেন, ”এক্ষুনি এই শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া উচিত। রাজ্য কেন এদের বেতনের ভার বহন করবে?” তাঁর আরও মন্তব্য, ”এই শিক্ষকদের ন্যূনতম প্রশিক্ষণ রয়েছে, কিন্তু এঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? জিটিএ এখন যদি বলে, এঁদের পরিবার ও শিশুদের কথা চিন্তা করতে, তাহলে বাকি শিশুরাও তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”সোমবার মামলায় সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী অভিযোগ তোলেন, তদন্তে গড়িমসি করছে সিআইডি। এরপর বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও কেন জিটিএ-র ৩১৩ জন শিক্ষককে কেন এখনও বেতন দেওয়া হচ্ছে? ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা বন্ধ করা হোক। এটাই রাজ্যের কাছে শেষ সুযোগ। বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী শুনানি। ওইদিন আদালতের নির্দেশের পর কী পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার, তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
