প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- একদিকে ভারত সরকারের থেকে অনুমতি না মেলা, অন্যদিকে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট। এই দু’য়ের চাপেই কি আদানিদের হাতছাড়া হল তাজপুর সমুদ্র বন্দর মঙ্গলবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির প্রকল্প থেকে সরানো হয়েছে আদানি গোষ্ঠীকে। আগামী সোমবার নতুন করে এই প্রকল্পের জন্য টেন্ডার ডাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।২০২০ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করে রাজ্য সরকার। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে নিউটাউনে সরকারি বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে আদানি গোষ্ঠীর হাতে বন্দর তৈরির বরাত তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তারপর ৩ বছর কাটলেও তাজপুর বন্দর তৈরিতে আদানি গোষ্ঠী কোনও তৎপরতা দেখায়নি বলে অভিযোগ। উল্টে হিনডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। শেল কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এমনকী বিজেপির সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠতা নিয়েও লাগাতার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রিনফিল্ড প্রযুক্তিতে বন্দর তৈরি হওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এর পরিকাঠামো নির্মাণে বিনিয়োগ হওয়ার কথা আরও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদানিদের এই প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক আগ্রহপত্র বা লেটার অফ ইনটেন্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর সরকারি বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠানে আদানি গোষ্ঠীর অন্যতম কর্ণধার করণ আদানির হাতে তুলে দিয়েছিলেন।এদিকে নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, বিদেশ ও জাহাজ মন্ত্রকের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র। কিন্তু আদানি গোষ্ঠী সামগ্রিকভাবে কোনও শর্ত পূরণ করতে না পারায়, কেন্দ্রের তরফে বন্দর তৈরিতে সবুজ সংকেত মেলেনি। পাশাপাশি ২০২৩ সালে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। তখন থেকে একটা অনুমান করা হচ্ছিল, বন্দরের কাজ শেষ পর্যন্ত আদানিদের হাতে থাকবে তো? অবশেষে সেই অনুমানই সত্যি হল। আদানি গোষ্ঠীর হাতছাড়া হল তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর। যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal