নিজস্ব সংবাদদাতা,কলকাতা :- পাটনার হাসপাতালের আইসিইউয়ে ঢুকে গুলি চালানোর ঘটনায় কলকাতা থেকে ধরা পড়লেন পাঁচ জন | কলকাতা সংলগ্ন নিউটাউনে একটি আবাসন থেকে ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে চার জনই খুনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ। মূল অভিযুক্ত তৌসিফ রাজা আগেই পটনা থেকে ধরা পড়েছেন। এবার আরও পাঁচ জন ধরা পড়লেন। এই নিয়ে পটনা-কাণ্ডে মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করা হল।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে চার জন সরাসরি খুনের ঘটনায় যুক্ত। আরেক জন খুনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন কি না, না কি বাকিদের আশ্রয় দিয়ে পালাতে সাহায্য করছিলেন তা নিয়ে তদন্ত চলছে। সব অভিযুক্তের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করেই তাঁদের অবস্থান চিহ্নিত করে এই যৌথ অভিযান চালানো হয়। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে পাটনার হাসপাতালে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ভেঙে ঢুকে পড়ে একাধিক দুষ্কৃতী। সরাসরি আইসিইউতে গিয়ে গুলি চালায় তারা। নিহত চন্দন মিশ্র নামের ওই ব্যক্তি নিজেও অপরাধ জগতে পরিচিত মুখ। তাঁর বিরুদ্ধে খুন-সহ প্রায় ২৪টি ফৌজদারি মামলা ছিল। কিছুদিন আগেই প্যারোলে ছাড়া পেয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেই সময়েই ঘটে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড।পাটনা পুলিশ সূত্রে খবর, তৌসিফের বাড়ি ফুলওয়ারি শরিফের গুলিস্তান কলোনিতে। তবে সে আদতে বক্সারের বাসিন্দা। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফুলওয়ারি শরিফের দুর্গা মন্দির এলাকায় চলতি বছরের রমজানের সময় একটা শুটআউটের ঘটনাতেও তার নাম জড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, পাটনার একটি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন তৌসিফ। তার মা-ও একজন শিক্ষিকা। বাবা একজন ব্যবসায়ী। তবে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েই অপরাধের দুনিয়ায় পা রাখে। সবসময় নিজেকে চর্চার মধ্যে রাখতে পছন্দ করে। সুপারি নিয়ে খুন করার কাজ শুরু করে। তারপর ধীরে ধীরে নিজের একটি ‘গ্যাং’ বানায়। মূলত অল্পবয়সি ছেলেদের নিজের দলে নেওয়া শুরু করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়। টাকার বিনিময়ে খুন করা, খুনের জন্য নানারকম সহযোগিতা করে সে।বিহারের বক্সারের বাসিন্দা চন্দনের বিরুদ্ধে ২৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ১২ খুনের মামলা। পুলিশের নিরাপত্তায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল চন্দনের। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় এক দল দুষ্কৃতী হাসপাতালে প্রবেশ করে ঢোকে। তার পর চন্দনকে গুলি করে খুন করার পর হাসপাতাল ছাড়ে। দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ছ’জন ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পরে তদন্ত চলাকালীন সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, দুষ্কৃতীদের মধ্যে পাঁচ জন হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করেছিল, এক জন হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছিল। হাসপাতালের আইসিইউতে গুলি চলার পরেই ওই আওয়াজে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই সুযোগে ভিড়ে মিশে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে এসেছিল পাঁচ দুষ্কৃতী। চন্দনকে খুনের পর হাসপাতালের বাইরে বন্দুক উঁচিয়ে উল্লাস করে তারা। তার পর দু’টি বাইকে ছ’জন মিলে চম্পট দিয়েছিল।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal