দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- প্রায় একদশক আগে বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলেন। তবে সেই সুখে বাধ সাধল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক | ছেলের গৃহশিক্ষকের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে পালালেন গৃহবধূ। দুই সন্তানের মাকে খুঁজে পেতে প্রায় প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হচ্ছেন যুবক। পুলিশবাবুদের কাছে তাঁর একটাই আর্জি ‘বউকে খুঁজে দিন’। কৃষ্ণনগরে পুলিশ সুপারের অফিসে এই আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বাঁকুড়ার গোপালচন্দ্র দাস। তবে শুধু কৃষ্ণনগর নয়, স্ত্রীর খোঁজ পেতে ইতিমধ্যেই একাধিক জেলার পুলিশ সুপারের অফিসে গিয়েছেন ওই যুবক |গোপাল জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী থানার ডিহিপাড়ায়। গত এক বছর হল তাঁর স্ত্রী দুই সন্তানকে ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছেন। তাঁর সন্দেহ, ছেলের গৃহশিক্ষককে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন স্ত্রী। কিন্তু এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কোনও খোঁজ পাননি। দুই সন্তানেরও হদিস পাননি। তাই পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে জেলায় জেলায় ঘুরছেন। গোপা জানান, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কৃষ্ণনগর এলাকার যোগসূত্র আছে। নবদ্বীপে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। স্ত্রীকে ফিরে পেতে সেখানেও গিয়েছিলেন। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘খোঁজ তো দিলেনই না। শ্বশুর-শাশুড়ি আমায় দ্বিতীয় বিয়ে করার উপদেশ দিলেন!’’যুবকের আর্থিক সঙ্গতি নেই। আগে ভিন্রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন। এখন কাজ ছেড়ে স্ত্রী-সন্তানকে খুঁজছেন তিনি। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর নবদ্বীপের এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় তাঁর। কিছু দিন পরে বিয়ে করেন দু’জনে। বর্তমানে দম্পতির মেয়ের বয়স ১০ এবং ছেলে ৮ বছরের। স্ত্রীকে নিয়ে আগে গুজরাতে ছিলেন গোপাল। সেখানে দু’জনেই কাজ করতেন। ফিরে আসার কিছু দিন পরে দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন গোপালের স্ত্রী। গোপালের অভিযোগ, ‘‘২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখ দুই সন্তান-সহ স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন গৃহশিক্ষক।’’ গোপালের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ডিসেম্বর মাসে নবদ্বীপের যুবতী নয়ন বিশ্বাসের সঙ্গে আলাপ হয় গোপালের। সেই আলাপ প্রেমে পরিণত হয়। দু’জনে বিয়েও করে ফেলেন। তাঁদের দুই সন্তান হয়। মেয়ের বয়স ১০ বছর। ছেলের বয়স আট বছর। তাঁদের দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন নয়ন। সেখানে তাঁদের সন্তানকে পড়াতেন স্থানীয় গৃহশিক্ষক রাজীব বসু। এরইমধ্যে নয়নের সঙ্গে রাজীবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে তৈরি হয়।গোপালের অভিযোগ, ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি তাঁর স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ওই গৃহশিক্ষক অন্য রাজ্যে নিয়ে চলে যান। এদিকে গোপালও বাইরে কাজ করতেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরই স্ত্রী ও সন্তানদের খোঁজ শুরু করেন তিনি। যদিও কোনও খোঁজ তিনি পাননি |গত আট মাস ধরে স্ত্রী এবং সন্তানকে অনেক খুঁজেছেন। গত বছর সেপ্টেম্বর নবদ্বীপ থানায় লিখিত অভিযোগও করেন। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এসপি-র কাছে গোপাল অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।এর মধ্যে দু’-এক বার নাকি স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। গোপালের দাবি, ‘‘ওরা ভাল নেই। ওদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। আর ওই মাস্টারের (গৃহশিক্ষক) বাড়ির লোকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখন আমায় মারধর করা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করছে তারা।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal