দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর। সেপ্টেম্বরে আরও একদিন ছুটি বাড়ল রাজ্য সরকার ও সরকার পোষিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। এমনিতেই সেপ্টেম্বরে এ বার দুর্গাপুজো। টানা পুজোর ছুটি রয়েছে। তার আগে ৩ সেপ্টেম্বর আরও একটি ছুটি পাবেন সরকারি কর্মীরা। করম পুজো উপলক্ষে এই ছুটি ঘোষণা করল নবান্ন।ওইদিন রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করল অর্থদফতর। ওইদিন সমস্ত সরকার ও সরকারপোষিত দফতর, স্কুল, কলেজ, পুরসভা, পঞ্চায়েতে ছুটি থাকবে। যেহেতু এই পুজোর নির্দিষ্ট দিন থাকে না তাই সরকারি ছুটির তালিকায় করম পুজোর কথা থাকে না। আলাদা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।করম পুজো একটি ঋতুভিত্তিক এবং কৃষিভিত্তিক লোকাচার। এই উৎসব মূলত ভাদ্র মাসের পার্শ্ব একাদশী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। যেহেতু এই পুজোর তারিখ প্রতি বছর আলাদা হয়, তাই এটি সাধারণ ছুটির তালিকায় থাকে না। বরাবরের মতো এবারও আলাদা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকেই রাজ্য সরকার এই দিনটিকে পূর্ণ দিবস ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা শুরু করে।করম পুজোর এক বিশেষ দিক হল, উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয় প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই। মহিলারা কংসাবতী, সুবর্ণরেখা বা শিলাবতী নদীর চর থেকে পবিত্র মাটি সংগ্রহ করেন, সেই মাটিতে বিভিন্ন শস্যদানা (ধান, গম, বুট, মুগ, তিল ইত্যাদি) বপন করেন। কয়েকদিন পর সেই শস্য অঙ্কুরিত হলে করম পুজোর দিন সেগুলি করম গাছের পাতা সহ পূজা করে উত্সর্গ করা হয়। এই পূজায় ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় বোনেরা উপবাসও করে থাকেন। পরে দিনভর চলে নাচ-গান, করম গীত, ও সামাজিক মিলন উৎসব।
করম পুজোর সামাজিক তাৎপর্য-ও বিশেষ। এটি একদিকে যেমন কৃষি জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, তেমনি ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও নারীর উৎসর্গের চিত্র তুলে ধরে। আধুনিক সময়ে এই লোকজ উৎসব শুধু গ্রামীণ বা আদিবাসী সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং শহরাঞ্চলেও বহু আদিবাসী ও কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসব পালন করেন।এবছর করম পুজোতে ছুটি ঘোষণায় আনন্দে উদ্বেল রাজ্যের আদিবাসী ও কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁরা বলছেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতিকে সরকারি স্বীকৃতি ও সম্মান জানানো সত্যিই আনন্দের।’’ অনেকেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত করম পুজো বা করম পরব। ভালো ফসলের কামনা করে আদিবাসীরা এই পরবে মাতেন। ২০২৩ সাল থেকেই এ দিনটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পূর্ণাঙ্গ ছুটি ঘোষণা করে। এ বছরও ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।ছুটি থাকবে চা বাগানের আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমস্ত কর্মীদেরও। শুধু মাত্র খোলা থাকবে কলকাতার রেজিস্ট্রার অফ অ্যাসিউরেন্স এবং কালেক্টর অফ স্ট্যাম্প রেভিনিউ–এর অফিস।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal