প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা:- দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীর ‘গণধর্ষণ’ কাণ্ডে কিনারা করতে পুলিশি সক্রিয়তা আরও বেড়েছে। একদিন পরপর দুই অভিযুক্তকে জালে আনল পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার শেষ অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তার নাম সফিকুল শেখ। এই ঘটনায় তাকেই মূল অভিযুক্ত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পরপর পুলিশের হাতে গ্রেফতার দুর্গাপুর কাণ্ডে শেষ দুই অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল দুর্গাপুর নগরনিগমের অস্থায়ী কর্মী নাসিরউদ্দিন শেখকে। দুপুরে জানা গেল, শেষ অভিযুক্ত সফিকুল শেখকেও জালে এনেছেন তদন্তকারীরা। বিজড়া এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে ছিল সে। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে সেখানকার গোপালমাঠ থেকে গ্রেপ্তার করেছে সফিকুলকে। তবে এর বিষয়ে এখনই বিস্তারিত তথ্য জানাতে পুলিশ নারাজ। আগেই ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা জানিয়েছিল জেলা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আশ্বাস দিয়েছিলেন, জড়িতরা কড়া শাস্তি পাবেই। গণধর্ষণের খবর পেয়ে দুর্গাপুর পৌঁছেছিল জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা। সেই প্রেক্ষিতে দুর্গাপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনকে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন কমিশনের সদস্য তথা বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বার পদক্ষেপ করেছে কমিশন। ১১ দফা সুপারিশের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি পাঠিয়েছে তারা।নির্যাতিতার বিনামূল্যে এবং সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এই মামলাটি ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতেশুনানি করতে হবে। নির্যাতিতার বিশেষ পরীক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে। কারণ ট্রমার কারণে তিনি সকলের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার অবস্থায় নাও থাকতে পারেন। পাশাপাশি জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন যাতে দুর্গাপুরের ওই মেডিক্যাল কলেজে দ্রুত পরিদর্শনে যায়, সেই সুপারিশও করেছে তারা।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিতা তাঁর বয়ানে জানিয়েছিল এই অপরাধে ৫ জন জড়িত আছে। সেই মতোই তদন্ত চালায় পুলিশ। আগেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রবিবার রাতে চতুর্থজনকে ধরে পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর দুর্গাপুর পুরনিগমের এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া শেষ দু’জনকে আজই দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে খবর। বাকি তিনজনকে আগেই ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে রেলপথে দুর্গাপুর গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। হাসপাতালে গিয়ে কথা বললেন নির্যাতিতার সঙ্গে। অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।গত শুক্রবার, ১০ অক্টোবর দুর্গাপুরের পরাণগঞ্জে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। রাত ৮টা নাগাদ বন্ধুর সঙ্গে খাবার কিনতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েছিলেন ওড়িশার বাসিন্দা ওই ছাত্রী। তখনই তিনি নির্যাতনের শিকার হন বলে জানা যায়। অভিযোগ, পরাণগঞ্জে জঙ্গলের জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়। শনিবার সকালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal