Breaking News

NRC আতঙ্কে পানিহাটিতে আত্মহত্যা ৫৭-র ব্যক্তির!বংশতালিকা লেখা ডায়েরিতেই সুইসাইড নোট লিখে চরম সিদ্ধান্ত প্রৌঢ়র

নিজস্ব সংবাদদাতা :-নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যে শুরু হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। আর সেই ঘোষণার পর থেকেই এনআরসি আতঙ্কে ভুগছিলেন পানিহাটির মহাজ্যোতি নগরের বাসিন্দা প্রণদীপ কর (৫৭)। বুধবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদেহের পাশেই মেলে একটি চিরকুট, তাতে লেখা, “আমার মৃত্যু এনআরসির জন্য।”
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রণদীপবাবু দীর্ঘদিন ধরেই এনআরসি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। পরিবারের বক্তব্য, গতকাল নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার পর থেকেই তিনি অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। ভেবেছিলেন, এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হলে হয়তো নাগরিকত্ব নিয়ে জটিলতায় পড়তে পারেন। রাতে খাওয়ার পর ঘুমোতে যান। সকালে বারবার ডাকার পরও দরজা না খোলায়, পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশীদের ডাকেন। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, একদম প্রথমে পলাশিতে থাকলেও বিগত ৪০বছরের বেশি সময় ধরে পানিহাটি অঞ্চলেই থাকতেন অবিবাহিত প্রদীপবাবু। প্রথম দিকে ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন তিনি, তার ভাই তপন কর ও ভ্রাতৃবধূ মৌসুমী। পরে তাঁরা পানিহাটি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আগরপাড়ার মহাজাতি নগরের উমা অ্যাপার্টমেন্টের তিনতলা ফ্যাটে থাকতে শুরু করেন। সোদপুরের উসুমপুর বটতলায় ভাইয়ের সঙ্গেই বেডিংয়ের দোকান চালাতেন তিনি। সোমবার এসআইআর ঘোষণা হয়। সেই খবরে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। রাতে দোকান থেকে বাড়িতে ফিরেই ভাইয়ের স্ত্রী মৌসুমীর কাছেও এসআর নিয়েও জিজ্ঞাসা করেন তিনি। তখনই তাকে ইতস্তত ও অসুস্থ মনে হয়েছিল পরিবারের। পরেরদিনই ঘর থেকে প্রদীপবাবুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার এবং সুইসাইড নোটে ‘আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী’ ― লেখা নিয়ে ভোটের আগে বিজেপির এসআইআর ও এনআরসির রাজনীতিকেই দায়ী করছেন পরিবার পরিচিতরা। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তনুশ্রী ভৌমিকের স্বামী জয়দীপ ভৌমিক প্রদীপবাবুর ঘনিষ্ঠ। তিনি বলেন, “রাতে যখন প্রদীপবাবু দোকান থেকে ফিরছেন, দেখা হয়েছিল। খুবই বিমর্ষ লাগছিল ওকে। পরিবারের থেকে জেনেছি, এসআইআর নিয়ে অনেকেই তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন। ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন এসআইআর কী, কীভাবে হবে। চিন্তায় নাকি ঘনঘন ধূমপান করছিলেন। সেই আতঙ্কই ওঁকে আত্মঘাতী হওয়ার দিকে ঠেলে দিল।”ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি মুরলিধর শর্মা বলেন, “প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।”

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *