দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-রাজ্যে মারণ ভাইরাসের বেলাগাম সংক্রমণ রুখতে শেষ পর্যন্ত লকডাউনের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার| আগামিকাল রবিবার থেকে ১৫ দিনের জন্য লকডাউন জারি করা হয়েছে | লকডাউনে সরকারি অফিস ও বেসরকারি অফিসের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে | পাশাপাশি বন্ধ থাকছে গণ পরিবহণ পরিষেবাও | শনিবার দুপুরে নবান্নে জরুরি সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় |
এদিন দুপুরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব বলেন, ‘রাজ্যে করোনার সংক্রমণ রুখতে এবং সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে বেশ কিছু কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে| তাই আগামিকাল রবিবার থেকেই বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করতে হচ্ছে | আগামিকাল থেকে এক পক্ষকাল অর্থাৎ ১৫ দিন সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে | সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি অফিস সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে| লোকাল ট্রেন আগেই বন্ধ করা হয়েছিল | কাল থেকে মেট্রো রেল, বাস ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে | তবে সংবাদমাধ্যম, স্বাস্থ্য পরিষেবা সহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিষেবাকে ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব আগামী ১৫ দিন রাজ্যে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে |
রবিবার (১৬ মে) সকাল ৬টা থেকে ৩০ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই নির্দেশ বহাল থাকবে-
* সমস্ত স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে |
*সব সরকারি-বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে | কেবল অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা চালু থাকবে |
* আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবা, অটো, মেট্রো বন্ধ থাকবে | ট্যাক্সি পরিষেবা চালু থাকবে এমার্জেন্সি পরিষেবার জন্য | রাজ্যের মধ্যে ট্রাক চলাচল বন্ধ| চিকিৎসা সামগ্রী, অক্সিজেন, খাদ্য সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নিয়ে যাওয়া যাবে না |
* শপিংমল, সুইমিংপুল, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে |
* মুদিখানা, খুচরো দোকান, বাজার, যা কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সেগুলি কেবল সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে |
* মিষ্টির দোকান সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে |
* রাজনৈতিক, ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ থাকবে |
* ওষুধের দোকান, চশমার দোকান স্বাভাবিক সময় খোলা থাকবে |
* চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সমস্তরকম ছাড় দেওয়া হবে |
* চা বাগানে কাজ চলতে পারে ৫০% উপস্থিতিতে, চটকলে তা ৩০% |
* ই-কমার্স ক্ষেত্রে সমস্ত পরিষেবা চালু থাকবে |
* এটিএম, ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে সকাল ১০ থেকে দুপুর ২টো |
* বিয়েবাড়িতে ৫০ জনের উপস্থিতির অনুমতি |
* সৎকারের ক্ষেত্রে ২০ জনের উপস্থিতির অনুমতি |
* রাত ৯টার পর সব কিছু বন্ধ, কেবলমাত্র এমার্জেন্সির ক্ষেত্রে অনুমতি | অর্থাৎ নাইট কার্ফু এ রাজ্যেও |
অকারণে যাতে সাধারণ মানুষ রাস্তায় ঘোরাঘুরি না করেন, তার জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত নয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত চলাচলের ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন | মারণ ভাইরাস রুখতে রাজ্য সরকার যে নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে, তা লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মহামারী আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যসচিব |