দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- গভীর নিম্নচাপ থেকে ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে ‘ইয়াস’ | সাগরের বুকে দাঁড়িয়ে সে যেমন দ্রুত শক্তিবৃদ্ধি করছে তেমনি ধীরে ধীরে সে এগোতে শুরু করেছে স্থলভূমির দিকে | এদিন বেলা ১২টার সময় তার অবস্থান ছিল দিঘা থেকে ৬২০কিমি দক্ষিণ পূর্বে | দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, যেহেতু যশ দ্রুত শক্তিবৃদ্ধি করছে আর ধীর গতিতে হলেও স্থান পরিবর্তন করা শুরু করে দিয়েছে তাই বুধবার দুপুরের মধ্যেই তার ল্যান্ডফল হতে চলেছে | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বুধবার দুপুর নাগাদ ওড়িশার পারাদ্বীপ এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে | বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড় | এমনকি তার সম্ভাব্য ল্যান্ডফল পয়েন্ট হিসাবে উঠে এসেছে দীঘার কাছেই ওড়িশার বিচিত্রপুর এলাকাটি | ল্যান্ডফলের সময় ‘ইয়াস’-এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার |কখনও কখনও ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে |
ইতিমধ্যেই যশের আগমন হেতু বাংলার আবহাওয়ায় বদল ঘটতে শুরু করে দিয়েছে | একই ছবি দেখা যাচ্ছে পড়শি রাজ্য ওড়িশাতেও | দুই রাজ্যেরই উপকূলবর্তী এলাকায় ইতিমধ্যেই হালকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টিও শুরু হয়ে গিয়েছে | এদিন বেলা গড়াবার সঙ্গে সঙ্গেই দুই ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে | ইতিমধ্যে কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণা, কলকাতা, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম এবং হুগলী জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে | ২৬ ও ২৭ মে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে | তার মধ্যে বুধবার আবার পূর্ণিমার ভরা কোটাল | সেক্ষেত্রে ভরা কোটালের সময়ের সঙ্গে যদি ইয়াসের ল্যান্ডফলের সময় মিলে যায় তা হলে বিপদের তল পাওয়া মুশকিল |
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় নবান্নের তরফে প্রকাশ করা হল হেল্পলাইন নম্বর | ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে যে কোনও বিপদে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬ | একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলয়া দু’টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর, ৮৯০০৭৯৩৫০৩ এবং ৮৯০০৭৯৩৫০৪ |
এরই মধ্যে ‘ইয়াস’-কে নিয়ে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন এনডিআরএফের ডিরেক্টর জেনারেল এনএস প্রধান | তিনি জানিয়েছেন, ‘যতটা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ প্রস্তুতি নিন | সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুত থাকুন | বাংলায় ইতিমধ্যেই এনডিআরএফের ১২টি দলকে মোতায়েন করা হয়েছে | প্রত্যেকটি দলে ৪৭ জন করে প্রশিক্ষিত জওয়ান রয়েছেন | তাঁদের প্রত্যেকের কাছে গাছ-ইলেকট্রিক পোল কাটার যন্ত্র, যোগাযোগের গ্যাজেট ছাড়াও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুত করা রয়েছে |’