দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- শুক্রবার দীর্ঘ বৈঠকের পর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন মুকুল রায়| তৃণমূলে যোগ দিয়েই মুকুল রায় বলেন, বিজেপি করব না বলেই, দল ছেড়ে ঘরে ফিরে এসেছি | কিন্তু এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে অনেকেই দলে ফিরতে চাইছেন | সেই প্রসঙ্গে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় | তিনি বলেন, ‘যাঁরা গদ্দার, তাঁদের দলে কোনওভাবেই ফেরানো হবে না|’ তৃণমূলে মুকুলের প্রত্যাবর্তনের পরই মমতা জানিয়ে দিলেন, সবাইকে দলে ফেরানো হবে না | এই প্রসঙ্গে তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, ‘যাঁরা গদ্দারি করেছেন, চরমপন্থী, নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের নেব না |’নাম না করে রাজীব ব্যানার্জি,প্রবীর ঘোষাল, জিতেন্দ্র তিওয়ারিদের কথাই যে বলছেন তা স্পষ্ট | মুকুল রায়ও এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘আগামী দিনে আরও অনেকে ফিরবেন’ |
তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক সম্মেলনে বার বার কড়া প্রশ্নের হাত থেকে মুকুল রায়কে আড়াল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় | তিনি বলেন, মুকুল রায় নির্বাচনের প্রচারের সময় তৃণমূলকে আক্রমণ করেননি | তৃণমূলের বিরুদ্ধে কটু কথা বলেননি | সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে মুকুল রায়ের কোনওদিন কোনও মতবিরোধ ছিল না| একধিক সময় বিজেপির অনুষ্ঠানে মুকুল রায়কে দেখা গেলেও, তাঁকে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে সেভাবে দেখা যায়নি | চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে একাধিকবার মুকুল রায়ের প্রতি সহানুভূতি দেখান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| নন্দীগ্রামের নির্বাচনী প্রচারে তিনি ‘বেচারা মুকুল’ বলেও কথাটি উল্লেখ করেন | আর বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভূতপূর্ব সাফল্যের পরই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করতে চেয়ে একের পর দলত্যাগী নেতারা ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন | কেউ কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন| সোনালি গুহ, সরলা মুর্মু, দীপেন্দু বিশ্বাসরা ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন | সেই তাঁরাই আবার তৃণমূলে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন | এমন আবহে বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘটল | তাহলে কি এবার দলত্যাগীরা ফের তৃণমূলে ফিরছেন? কিন্তু, সকলকে যে দলে ফেরানো হবে না,তা কার্যত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |