নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব বর্ধমান :- মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেই ছেলেকে বড় করছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের সুনন্দা বন্দ্যোপাধ্যায় | কিন্তু ছেলের সঙ্গে প্রায়শই ঝামেলা লেগে থাকত তাঁর | তার মূল কারণ ছেলের পড়াশোনা | আর ঝামেলা হলেই রাগ করে দরজা বন্ধ করে একটা ঘরে নিজেকে আলাদা রাখতেন তিনি | তারপর রাগ পড়লে নিজেই বেরিয়ে আসতেন ঘর থেকে | খোঁজই নেয়নি ছেলে | চলে যায় মামার বাড়িতেও | যদিও মায়ের খোঁজ না পাওয়ার কথা জানিয়েছে সে | তারপরই পুলিশের তৎপরতায় বাড়ি গিয়েও উদ্ধার হল স্কুল শিক্ষিকার ঝুলন্ত দেহ | কালনার প্রফেসর কলোনির ঘটনায় মৃতার ছেলের ভূমিকায় রহস্য | মৃতার ছেলের দাবি, বুধবার সকালে ডাকাডাকির পরেও মায়ের কোনও সাড়াশব্দ পায়নি সে | আতঙ্কিত হয়ে কলকাতায় মামার বাড়ি চলে যায় | মামাদের গিয়ে গোটা ঘটনা খুলে বলে | বুধবার রাত্রে মামাদের সঙ্গে নিয়ে এসে কালনায় ফেরে | খবর দেওয়া হয় কালনা থানায় | কালনা থানা পুলিশ খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় | দরজা ভেঙে ঘরের মধ্যে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় শিক্ষিকার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ | কালনা মহকুমা হাসপাতালে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় | ছেলের ভূমিকায় রহস্য দানা বেঁধেছে | পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে | মৃতার ছেলে সম্ভ্রমের বয়ান অনুযায়ী, “পড়াশোনা নিয়ে মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা হত | বহুবার মা রাগ করে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয় | গত মঙ্গলবার দীর্ঘক্ষণ দরজা খোলে না মা| আমি তখন মামার বাড়ি চলে যাই। ভেবেছিলাম মার রাগ এমনিতেই কমে যাবে | তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে। এমনটা হবে ভাবিনি |” পুলিশের অনুমান, দুদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে | তার ফলে শরীরে পচন ধরেছে | প্রতিবেশীদের কথায়,“মা-ছেলের তো অশান্তি হত | পরে আবার স্বাভাবিকও হয়ে যেত | এমনটা হবে বুঝতে পারিনি|” তবে সম্ভ্রমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ | কেন এই দুই দিনে একবারও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করল না ছেলে, কেন একবারও ফোন করেও খোঁজ নিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে |