দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- গিরীশ পার্কে সোনার দোকানে লুঠের তদন্তে নেমে হতবাক পুলিশ | যারা আক্রান্ত, তারাই মূল চক্রী | অভিযোগকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পর্দাফাঁস | দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ | জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম নীতিশ রায় এবং নীতিন রায় | পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে নীতিশ মাথায় আঘাত নিয়ে গিরীশ পার্ক থানায় পৌঁছান | তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর থেকে সাতটি সোনার বার লুঠ করেছে দুষ্কৃতীরা | নীতিশ দাবি করেন, তাঁর মালিক ওড়িশায় থাকেন | তিনি বাংলায় তাঁর ব্যবসা দেখভাল করেন | অভিযোগ পেয়ে নীতিশকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ | তবে নীতিশের বক্তব্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে | তাতে সন্দেহ হয় পুলিশের | পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যেতে থাকলে সত্যিটা ফাঁস হয় | পুলিশ জানতে পারে নীতীশ ও তাঁর ভাই নীতিন সোনা লুঠ করেছেন | নিজেদের দিকে অভিযোগের আঙুল যাতে না ওঠে, সে কারণেই গল্প বানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা | এরপরই গ্রেফতার করা হয় নীতীশ ও তাঁর ভাইকে| ধৃতদের বাড়ি দমদমের নয়াপট্টি এলাকায় | তল্লাশি চালিয়ে উল্টোডাঙা রেল কলোনির কাছ থেকে লুঠ হওয়া সোনাও উদ্ধার করেছে পুলিশ | সোনার পরিমাণ প্রচুর| ৮১১৬ গ্রাম সোনার ৭ টি বাট এবং ৭৪৩ গ্রাম সোনার ১ টি বাট | এরপরই তদন্ত নামে পুলিশ | সিসিটিভতে দেখা যায়, সত্যিই দুই ব্যক্তি তার অফিসে ঢুকছে মাস্ক পড়ে | কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন | কিন্তু গোটা প্লটকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে যে সিসিটিভির সামনে ভাইকে ট্যাক্সি দাঁড় করাতে বলেছিল নীতিশ সেই সিসিটিভি ফুটেজই তদন্তকারীদের হাতে মোক্ষম একটি ক্লু তুলে দেয় | তদন্তকারীরা দেখেন, ওই দুই ব্যক্তি বেরিয়ে যাওয়ার পর একবার বেরিয়ে যাচ্ছেন নীতিশ | তখন তাঁর মাথায় বা মুখে কোথাও ব্যান্ডেজ নেই | কিন্তু কিছুক্ষণ পরে দেখা যায় মাথা ও মুখে ব্যান্ডেজ করে ফিরে আসছেন নীতিশ | তাছাড়া যে দু’জন সোনা লুঠ করে নিয়ে গেলে চিৎকর ছুটে এসে লোককে জানানোর কাজও করেননি তিনি | সন্দেহ বাড়তেই চেপে ধরা হয়। লাগাদার জেরায় ভেঙে পড়ে আসল গল্প স্বীকার করেন অভিযুক্ত | ফলে নিজের মাথা ফাটিয়ে হল না শেষ রক্ষা|