দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- সোমবার সকালে ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বিখ্যাত এই চিত্র পরিচালক | মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর | দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কিডনি এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন | ১৪ জুন তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে | অবস্থার অবনতি হতেই তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল | মাঝে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল | সম্প্রতি ফের অবস্থার অবনতি হয় | এরপরই সোমবার মৃত্যু হল এই প্রবীণ পরিচালকের| তাঁর শেষকৃত্য হোক অনাড়ম্বর সেটাই চেয়েছিলেন প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার | সেইমতই এদিন তাঁর শেষযাত্রা সম্পন্ন হল |এসএসকেএমেই দেহদান করা হল তাঁর | এদিন তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা মাথায় রেখেই ফুলমালায় শ্রদ্ধা জানানো হল না | হল না গান স্যালুটে শেষ বিদায় | বরং তাঁর গায়ে দেওয়া হল কমিউনিস্ট পার্টির পতাকা | গীতার বদলে বুকের উপর দেওয়া হল গীতাঞ্জলি |
এনটিওয়ান থেকে এদিন তাঁর মরদেহ ফের আসে এসএসকেএম -এ| সেখানেই হয় তাঁর দেহদান |এদিন তাঁর মৃত্যুর খবর শোনার পরেই হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও অরূপ বিশ্বাস | শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী | এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন,বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি | তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন | বয়স হয়েছিল ৯১ বছর |”এদিন হাসপাতালে এসেছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, শতরূপ ঘোষ প্রমুখ| এদিন দুপুর ২টো ৪৭ মিনিটে তাঁর মরদেহ হাসপাতাল থেকে বের করে আনা হয় | এদিন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন দেবশ্রী রায়, দেবদূত ঘোষ, দোলন রায়, বোধিসত্ব মজুমদার, সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ | শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর শববাহী গাড়ি ফের রওনা দেয় এসএসকেএমের দিকে |বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এই প্রবীণ পরিচালকের অবদান অনস্বীকার্য | ১৯৩১ সালের ৮ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার বগুড়ায় জন্ম তরুণের | বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তরুণের পড়াশোনা কলকাতাতেই। ১৯৫৯ সালে প্রথম পরিচালনা করেন তিনি | এরপর একের পর এক কালজয়ী ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি | পলাতক’ ছবি তৈরির পর ‘যাত্রিক’ থেকে বেরিয়ে আসেন তরুণ মজুমদার | ১৯৬৫ সালে ‘আলোর পিপাসা’ এবং ‘একটুকু ভালবাসা’ নামের দু’টি সিনেমা তৈরি করেন তিনি | তারপর থেকে নিজের পরিচালনায় তৈরি করেছেন ‘বালিকা বধূ’,‘নিমন্ত্রণ’,‘কুহেলি’,‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘গণদেবতা’,‘দাদার কীর্তি’,‘ভালবাসা ভালবাসা’,‘আপন আমার আপন’,‘আলো’,‘চাঁদের বাড়ি’র মতো সিনেমা|তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে |