দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- চিকিৎসার জন্য জানুয়ারি মাসে কুয়েত থেকে এক যুবতী ও তাঁর ভাই কলকাতায় এসেছিলেন। আর জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ আলিপুর চিড়িয়াখানার মেন গেটের সামনে থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান ওই যুবতী। বিদেশের মাটিতে বোনকে হারিয়ে অথই জলে পড়ে যান ভাই। কলকাতা পুলিশের তৎপরতায় বাংলাদেশ থেকে কুয়েতের যুবতীকে উদ্ধার করে আনা হয়। মেয়েকে ফিরে পেয়ে কলকাতা পুলিশকে প্রশংসা করে চিঠি পাঠাল কুয়েত দূতাবাস।কুয়েতের আলহামদি শহরের ৩১ বছরের এক মহিলা ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে গত জানুয়ারিতে কলকাতায় এসেছিলেন। ২৭ জানুয়ারি ভাইয়ের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া ঘুরে চিড়িয়াখানা ঘুরতে যান। চিড়িয়াখানা থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় বোন। আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভাই। তদন্তে নেমে পুলিশ আলিপুর চিড়িয়াখানার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন চিড়িয়াখানা থেকে এক যুবকের সঙ্গে ওই মহিলা ট্যাক্সিতে ওঠেন।এরপর নিউ মার্কেট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে একটি হোটেলে ওই মহিলা ও পুরুষকে দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ যখন হোটেলে পৌঁছায় তখন তাঁরা সেখানে ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলে জমা দেওয়া ওই ব্যক্তির পাসপোর্টের কপি থেকে নাম ও ঠিকানা জানা যায়। ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের।
কুয়েতের মহিলা ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাংলাদেশে চলে যান। এরপরই বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহিলাকে উদ্ধার করে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ওই বাংলাদেশি ব্যক্তি কুয়েতের ওই পরিবারে গাড়ি চালক ছিলেন। মহিলা বিবাহিত ও তার সন্তান রয়েছে। ট্যাক্সির গতিবিধি আন্দাজ করে নিউ মার্কেট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, একটি হোটেলে ওই যুবক–যুবতীকে রয়েছেন। কিন্তু পুলিশ ওই হোটেলে গিয়ে তাঁদের নাগাল পাননি। কারণ ততক্ষণে সেখান থেকে সরে পড়েছেন তাঁরা। হোটেলে জমা দেওয়া ওই যুবকের পাসপোর্টের জেরক্স কপি থেকে নাম–ঠিকানা জানা যায়। ওই যুবক বাংলাদেশের বাসিন্দা।
নিখোঁজ ব্যক্তির তদন্তে বড় ভূমিকা থাকে মোবাইল ফোনের। ওই যুবতীর কাছে মোবাইল থাকলেও তাতে কুয়েতের সিম থাকায় তাঁর অবস্থান জানার উপায় ছিল না। যুবতী নৌরা ও তাঁর ভাই আবদুল্ল ফারেজ আলাজমি কলকাতায় এসেছিলেন। ইএম বাইপাসের ধারে মাঠপুকুরে একটি পাঁচতারা হোটেলে উঠেছিলেন তাঁরা। বাইপাসের ধারে এক নামী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। সেখানে যাতায়াত সময়ও প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতেন যুবতী। চিড়িয়াখানা থেকে নিউ মার্কেট আর সেখান থেকে বনগাঁ সীমান্তে যান। এই যুবকের নাম আনোয়ার হোসেন। আলিপুর থানা নৌরা এবং আনোয়ারের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করে। এরপরই বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আর ওই যুবতীকে উদ্ধার করে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।৮ ফেব্রুয়ারি বিদেশ মন্ত্রকের পাশাপাশি কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে চিঠি পাঠিয়ে আলিপুর থানার প্রতি তাঁদের কৃতজ্ঞতার কথা জানিয়েছে সেদেশের সরকার।