প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- ফ্ল্যাটের অন্দরে মজুত করা পশুর চামড়া-হাড়-দাঁত-নখ। এমনকী, রয়েছে মানুষের মাথার খুলিও। নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পেয়ে দমদম এলাকার এক তান্ত্রিকের বাড়িতে হানা দিতেই চক্ষু চড়কগাছ বনদপ্তর ও পুলিশ কর্তাদের। তান্ত্রিক পলাতক হলেও অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।খোঁজ নেই মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীর। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ধৃত তিন। হরিণের চামড়া দিয়েছিলেন সৌরভ, দাবি ধৃত দুলালের পরিবারের। এই পলাতক সৌরভ চৌধুরীই কর্মকাণ্ডের মূল পাণ্ডা বলে জানতে পেরেছেন বনদফতরের আধিকারিকরা। জেরায় ধৃতরা আরও দাবি করে, বছর দেড়েক আগে গুরুজি ( সৌরভকে গুরু জি বলে ডাকা হয়) হরিণের চামড়ার, সিং মাথার খুলি এইসব নিয়ে এসেছিল। ডানলপের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সেগুলো আনা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে ধৃতরা দাবি করে। বৃহস্পতিবারই ধৃত তিনজনকে আদালতে পেশ । পলাতক গুরুজি ওরফে সৌরভ চৌধুরির নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য এদিন আদালতে আবেদন জানাবে বনদফতর।
এমনকী চোরা চালানের সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।পুলিশ সূত্রে খবর, যে বাড়িতে ওইসব জিনিস মজুত ছিল সেই বাড়ির মালিকের স্ত্রী থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। একইসঙ্গে তিনি পুলিসকে জানান, যে বাড়িতে তাঁর স্বামী থাকেন সেখানে হরিণের শিং, চামড়া, বাঘের নখের মধ্যে জিনিস মজুত করা হয়েছে। ওই খবর পাওয়ার পর বুধবার সন্ধেয় ডিএফও-র নেতৃত্বে বন দফতর ও পুলিস যৌথভাবে ওই ফ্ল্যাটে হানা দেয়। এরপরেই সামনে আসে এই ঘটনা। ধৃতের এক প্রতিবেশী বলেন, শুনেছি উনি হাত দেখতেন। রাস্তায় দেখা হলে কুশল বিনিময় হতো। গত ৪০ বছর ধরে ওদের দেখছি।সৌরভের হদিশ না পেয়ে তাঁর বাবা রাখাল চৌধুরি, বন্ধু অরিজিৎ গুপ্ত ও পাশের একটি ফ্ল্যাট থেকে শিষ্য দুলাল অধিকারীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, দুলাল এলাকার কেবল অপারেটর হিসেবে পরিচিত। তাঁর বাড়ি থেকেও পশু-পাখির দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। পুলিশ ও বনদপ্তর সূত্রে দাবি, পারিবারিক অশান্তির জেরে সৌরভের স্ত্রী বেআইনি সামগ্রী মজুতের কথা জানিয়েছিলেন। তারপরই এই অভিযান। তবে তল্লাশি শুরু হতেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সৌরভের স্ত্রী। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।