দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- আর্থিক ভাবে অনগ্রসরদের জন্য সরকারি চাকরিতে আসন সংরক্ষণের প্রক্রিয়া চালু হল রাজ্যে। এই মর্মে রাজ্য শ্রম দপ্তর থেকে আগেই একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। সেটা যাতে যথাযথ ভাবে কার্যকর হয়, সেই জন্য এ বার নবান্ন থেকে প্রতিটি দপ্তরকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এর ফলে বদল করা হয়েছে নিয়োগ সংক্রান্ত সরকারি নিয়মাবিধি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্যের আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের নীতি চালু করে দিল। শতাংশের পরিমাণ ১০ শতাংশ। রাজ্যের শ্রম দফতর এই মর্মেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ১০০টি পদের মধ্যে কোনগুলি আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে তা ওই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্য Model 100 Point Rostar of Vacancy সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি রাজ্যের শ্রমদফতর জারি করেছে গত ৭ ফেব্রুয়ারি। এতে বলা হয়েছে, সরকারি দফতর, সরকারি সংস্থা বা কোম্পানি, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে। এই বিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য শ্রমদফতর।গত বছরের শেষ দিকে আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের পক্ষে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ। সেটাই এ বার রাজ্যের সব ক’টি দপ্তরে কার্যকর হবে। সেই জন্য ‘১০০ পয়েন্ট রস্টার’ সংশোধনের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন রাজ্যপাল।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়াদের সংরক্ষণের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছি। সেটা কার্যকর হওয়ায় আমরা খুশি।’ রাজ্য কোর্ডিনেশন কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘বাম আমলেই আদিবাসীদের মধ্যে পিছিয়ে পড়াদের জন্য সংরক্ষণ প্রথা চালু হয়েছিল। তবে এখন যেটা হচ্ছে, সেটা গিমিক। এ সব পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে হচ্ছে।’নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের শ্রমদফতর যে Model 100 Point Rostar of Vacancy তৈরি করেছে তাতে ১০০টি পদের মধ্যে ৩, ১৭, ২৫, ৩৪, ৪৪, ৫৫, ৬২, ৭৫, ৮৫ ও ৯৫ নম্বর পদটি আর্থিকভাবে অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। এরমধ্যে ৫টি পদ আবার প্রাক্তন সেনাকর্মীদের জন্য রাখা হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে এটাও বলে দেওয়া হয়েছে যে, ওই পদে যোগ্য কাউকে পাওয়া না-গেলে ওই পাঁচটি পদে সাধারণ আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের নিয়োগ করা যাবে। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, কোনও নিয়োগে পদের সংখ্যা ১০০’র কম বা বেশি হলেও এই রোস্টারের ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হবে।