প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার অয়ন শীলের ১০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সম্পদের হদিশ পেয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। নিজের স্ত্রী-পুত্র তো বটেই একাধিক ঘনিষ্ঠের অ্যাকাউন্টে অয়ন শীল কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে বলে সূত্রের খবর। এমনকী ঘনিষ্ঠদের নামে প্রচুর সম্পত্তিও কিনেছেন তিনি। অয়ন ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ৫০টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সেই অ্যাকাউন্টগুলির খোঁজখবর নিচ্ছেন ইডির আধিকারিকরা। কী ভাবে এই বিপুল সম্পত্তি হল অয়নের, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল হুগলির প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শান্তনুর গ্রেফতারের পর পরই অয়নের ব্যাপারে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। শান্তনুর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অয়ন। এরপরই গত ১৯ মার্চ অয়নের সল্টলেকের অফিসে হানা দেয় ইডি। দীর্ঘ প্রায় ৩৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর ২০ মার্চ গ্রেফতার করা হয় অয়নকে।
শান্তনুর ‘ঘনিষ্ঠ’-এর গ্রেফতারের পরই একের পর এক তথ্য হাতে পান তদন্তকারীরা। শুধু শিক্ষা নয়, পুরসভাতেও টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করেছেন তদন্তকারীরা। অয়নের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নথি থেকে বেশ কয়েক জন এজেন্টের নামের তালিকা হাতে পেয়েছে ইডি।ইডি সূত্রের খবর, রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে অয়ন শীলের সম্পত্তি রয়েছে। পেট্রল পাম্প, হোটেল, বিনোদন ব্যবসায় চাকরি বিক্রির টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। স্ত্রী – ছেলে ও ছেলের প্রেমিকার নামে তো বটেই, টাকা বিনিয়োগ করেছেন ঘনিষ্ঠদের নামেও। এব্যাপারে কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার শ্বেতা চক্রবর্তীর ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সঙ্গে শমীক চৌধুরী নামে এক জীবন বিমা এজেন্টও রয়েছেন আসতকাচের তলায়। গত ১৮ মার্চ শান্তনুর বলাগড়ের ঠিকানায় তল্লাশির সময় অয়ন শীলের সন্ধান পায় ইডি। প্রথমে তাঁকে চুঁচুড়ায় জেরা শুরু করেন গোয়েন্দারা। জানতে পারেন অয়নের বিধাননগরের ঠিকানার ব্যাপারে। ওই দিন বিকেল থেকে টানা ৩৭ ঘণ্টা অয়নের বিধাননগরের ঠিকানায় তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। এর পর ২০ মার্চ কাকভোরে অয়নকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান তাঁরা। অয়নের বিধাননগরের দফতরে তল্লাশি চালিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন স্কুলের চাকরি বিক্রির পাশাপাশি রাজ্যের অন্তত ৬০টি পুরসভায় চাকরি বিক্রিতে যুক্ত ছিলেন তিনি।