দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতির ভর্ৎসনার চারদিন পর মুর্শিদাবাদের গোঠা হাই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করল । ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাক্তন ডিআই। যদিও মূল অভিযুক্ত অনিমেষ তিওয়ারি এখনও অধরা।শনিবার ধৃতদের মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় ৷ এঁরা হলেন পূরবী দে বিশ্বাস, অঞ্জনা মজুমদার এবং নিত্যগোপাল মাঝি| আদালত তিনজনকেই পাঁচদিনের জন্য সিআইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে এই ঘটনায় আগেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশিস তিওয়ারিকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি।মুর্শিদাবাদের সুতির গোঠা হাই স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির ঘটনায় আগে থেকেই প্রাক্তন DI পূরবী দের ভূমিকা আসতকাচের তলায় ছিল। শনিবার তাঁকে ভবানী ভবনে তলব করেছিল সিআইডি। সেখানে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। তার আগে শুক্রবার বহরমপুরে DI অফিসের ৫ জন প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মীকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মধ্যে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা DI অফিসের করণিক তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি নিত্যগোপাল মাঝি ও প্রাক্তন করণিক অঞ্জনা মজুমদার। বেআইনি নিয়োগে এদের কারনও গাফিলতি, কারও যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।এসবের মধ্যেই মুর্শিদাবাদের অবসরপ্রাপ্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা অবসরপ্রাপ্ত ডিআই পূরবী দে বিশ্বাসকে কলকাতার ভবানী ভবনে ডেকে পাঠায় সিআইডি ৷
দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ অন্যদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বহরমপুরে সিআইডির স্থানীয় দফরে আরও পাঁচজনকে ডেকে পাঠানো হয় ৷ তাঁদেরও দীর্ঘক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন রাজ্যের গোয়েন্দারা ৷ সেই জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার হন অঞ্জনা মজুমদার ও নিত্যগোপাল মাঝি ৷ এঁদের মধ্যে প্রথমজন ডিআই অফিসের প্রাক্তন করণিক ৷ আর দ্বিতীয়জন জেলার হরিদাসমাটি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি ৷ তিনিই আবার জেলা শিক্ষা দফতরের বর্তমান করণিক ৷গোঠা হাই স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক অনিমেষ তিওয়ারির নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। তদন্তে উঠে আসে ভূগোলের কোনও ডিগ্রি না থাকলেও ভূগোলের শিক্ষকের পদে চাকরি পেয়েছেন তিনি। জানা যায় অনিমেষের বাবা আশিস তিওয়ারি ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য ছিলেন তিনি। কারচুপি করে তিনিই ছেলেকে নিজের স্কুলে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সম্মতি ছাড়া কী করে ওই ভুয়ো শিক্ষক ৩ বছর বেতন পেলেন সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজছিলেন গোয়েন্দারা। অবশেষে তার উত্তর মিলল, প্রাক্তন ডিআই পূরবী দের গ্রেফতারিতে।