দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- মঙ্গলবারই রাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত কারও মেয়াদ বৃদ্ধি হয়নি। কোনও অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগও ঘটেনি। কিছুদিনের মধ্যে আরও কয়েকজন উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। এই আবহে অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকদের রাজভবনে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। বুধবার রাজ্যের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে অভিযোগ। তাঁদের কাছেই জানতে চাওয়া হয়, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিতে তাঁরা প্রস্তুত কি না। সার্চ কমিটিকে সরিয়ে রেখে রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগ করতে চলেছেন রাজ্যপাল। সে কারণেই বুধবার ওই বৈঠক হয়েছে। তবে সেই বৈঠকে শিক্ষা দফতরের কোনও প্রতিনিধি ছিল না।রাজভবন সূত্রের খবর, মোট ১০ জন অধ্যাপককে ডেকে বৈঠক করেছেন আনন্দ বোস। তাঁদের প্রত্যেককেই জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তাঁরা উপাচার্যের দায়িত্ব নিতে চান কি না। সূত্রের খবর, বৈঠকে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত, বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে।
এভাবে শিক্ষা দফতরকে বৈঠকে না ডাকায় ফের রাজ্য-রাজ্যপাল প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এই দড়ি টানাটানিতে আদতে ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার, এমনটাই বলছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ। উল্লেখ্য, শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আগেও রাজ্যপালের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। শিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে উপাচার্যদের কাছে কেন রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল, তা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।এর আগেও উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। গত মার্চ মাসে রাজ্যের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। আইন মেনে নিয়োগ হয়নি বলে উপাচার্য পদ নিয়ে একটা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সেই সময় যাঁরা পদত্যাগ করেছিলেন, রাজ্যপাল তাঁদের তিন মাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিলেন।সূত্রের খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সুরঞ্জন দাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেখানকার এক অস্থায়ী ডিনকে বুধবার ডেকে পাঠানো হয়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ইংরেজি বিভাগের একজন সিনিয়র অধ্যাপক রাজভবনে যান। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে তাঁরা দায়িত্ব গ্রহণে ইচ্ছুক কি না। রাজ্য সরকার স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের নয়া অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। তবে সার্চ কমিটির মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তার আগে কার্যভার সামলানোর জন্য সিনিয়র অধ্যাপকদের দায়িত্ব দিতে চাইছে রাজভবন। যা নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে।