দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বাইরে বেরিয়ে গেল ডিফেন্স অডিট দফতরের গোপন ছবি। এখানেই কর্মরত এক মহিলা এই ছবি তুলে তাঁর বন্ধুকে পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ। কারণ সহকর্মীরা তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা করত বলে অভিযোগ। তারই বদলা নিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আওতায় থাকা দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের ‘ডিফেন্স অডিট’ দফতরের কয়েকজন সহকর্মী এবং অফিসের ছবি তুলে এক বন্ধুকে পাঠান ওই দফতরেরই এক মহিলা কর্মী। এটা একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ কাজ। সেখানে নিয়ম ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ দফতরের গোপন ছবি তুলে বাইরে পাঠান ওই মহিলা কর্মী। তদন্তে সেটা ধরা পড়লে ওই মহিলা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।পুলিশ ও সেনা সূত্রের খবর, যেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আওতায় ওই নিরাপত্তা ছেদ করে মাছি ঢুকতে পারে না ও দেশের সুরক্ষা জড়িত থাকায় দপ্তরের কর্মী আধিকারিকদেরও অনেক বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়, সেখানে নিয়ম-নিষেধ ভেঙে একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের গোপন ছবি তুলে বাইরে পাঠাচ্ছিলেন ওই মহিলা কর্মী। শেষ পর্যন্ত সেনাদের অন্তর্তদন্তে ধরা পড়ে বিষয়টি। ইস্টার্ন কম্যান্ড এর পক্ষে আলিপুর
থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তদন্তে মহিলা ছাড়াও নাম উঠে আসে অভিযুক্ত মহিলা কর্মী সঙ্গীতা চক্রবর্তীর সেই বন্ধু, যিনি কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থার মুখ্য চিকিৎসক। বিপদ বুঝে ওই ব্যক্তি আলিপুর আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। যদিও আলিপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন সঙ্গীতা। পুলিশের মতে, কোনও নাশকতার জন্য নিষিদ্ধ জায়গার ছবি বাইরে পাঠানো হচ্ছিল, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেই ক্ষেত্রে মহিলার কাছে স্পাই ক্যামেরা থাকতে পারে। তার জন্য তাঁর বাড়িতেও চালানো হচ্ছে তল্লাশি। প্রতিরক্ষা দপ্তরের ছবি ও গোপন তথ্য বাইরে কোনও জঙ্গি সংগঠন বা পাকিস্তান অথবা চিনের মতো শত্রুদেশের কাছে পাচার করা হত কি না তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। রবিবার আলিপুর আদালতে ধৃত মহিলাকে তোলা হলে তাঁকে ১৩ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ সূত্রে খবর, সঙ্গীতা চক্রবর্তীর স্বামী প্রতিরক্ষা দফতরে চাকরি করতেন। কর্মরত স্বামীর মৃত্যুতে চাকরি পান স্ত্রী সঙ্গীতা চক্রবর্তী। আলিপুরের ‘ডিফেন্স অডিট’ দফতরে চাকরি পান। তারপর কয়েকজন কর্মী দেখতে পান, ওই মহিলা কর্মী নিজের মোবাইলে দফতরের নানা ছবি তুলছেন। গোপনে সহকর্মীদের ছবিও তোলেন। সিসিটিভির ক্যামেরা পরীক্ষা করতেই সেই ছবি ধরা পড়ে। তখন তাঁকে ডেকে জেরা করা হয়। এমনকী সঙ্গীতার মোবাইল ফোন পরীক্ষা করতেই দেখা যায়, ওই চিকিৎসক বন্ধুকে সঙ্গীতা ছবিগুলি পাঠিয়েছেন। তারপরই বাড়ি থেকে সঙ্গীতাকে গ্রেফতার করা হয়।