দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- স্ত্রীকে খুন করে পুলিশকে ডেকে পাঠালেন স্বামীই। তবে তার আগে ঠান্ডা মাথায় সেরে নিলেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তারপর নিজেই ১০০ ডায়াল করে খবর দিলেন কলকাতা পুলিশকে। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ এসে দেখল নিহতের পাশে বসে রয়েছেন ‘খুনি’।ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে, কলকাতার বেহালার রাজা রামমোহন রায় রোডের একটি বাড়িতে। পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার গভীর রাত ১টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন স্বামী। তবে সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পুলিশকে খবর দেননি।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতা মহিলার নাম সমাপ্তি দাস। তাঁর বয়স ২৮ বছর। তাঁর স্বামীর নাম কার্তিক দাস,বয়স ৪১।পেশায় মুরগী ব্যবসায়ী। দম্পতি সুকান্ত পল্লীতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কৃষ্ণা এবং কার্তিকের পাঁচ বছরের এক কন্যা ও বারো বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। প্রতিবেশীদের দাবি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্যদিন ঝুটঝামেলা লেগেই থাকত। গত এক বছর ধরে বেহালার রাম মোহন রায় রোডের এই বাড়িতে ভাড়া থাকছিলেন তাঁরা। তবে বৃহস্পতিবার কার্তিকের ফোন পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁর দুই সন্তানকে ওই বাড়িতে দেখতে পায়নি।পুলিশ সূত্রে খবর, রাত ১টা নাগাদ ওই ঘটনার ঘটার অনেক পরে পুলিশকে খবর দেন কার্তিক। পুলিশ আসার সময়েও তিনি বসেছিলেন স্ত্রীর পাশেই। তবে মাঝের সময়টিকে তিনি কিছু কাজ করেছেন। প্রথমেই দুই পুত্র এবং কন্যাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন অন্যত্র। পুলিশের ধারণা ঘটনাস্থল গুছিয়েই পুলিশ সকালে খবর দেন কার্তিক। তার পরেই আবার এসে বসেন স্ত্রী-র মৃতদেহের পাশে। পুলিশ এলে সেখানেই তিনি দোষ কবুলও করেন। পুলিশকে কার্তিক জানান, তিনিই হত্যা করেছেন তাঁর স্ত্রীকে।স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, মহিলার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি জেনে যান কার্তিক। তারপর রোজ-রোজ গন্ডগোল করত দম্পতি। পুলিশ কার্তিকের বয়ান নথিভুক্ত করার পর তাঁকে নিয়ে থানায় যায়। অন্য দিকে, সমাপ্তির দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ গোটা ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। ওই দম্পতির আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। কেন দুই সন্তানের মা সমাপ্তিকে খুন করলেন কার্তিক, তাঁদের মধ্যে কোনও অশান্তি চলছিল কি না, এই সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।