প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- গল্ফগ্রিনে কাটা মুন্ডু উদ্ধারের দেড়দিনের মধ্যেই মৃতার বাকি দেহাংশের হদিশ মিলল। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার বিকেল নাগাদ গলফগ্রিনের অদূরে রিজেন্ট পার্ক এলাকা থেকে শরীরের বাকি দুটি অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। SIT সদস্যদের দাবি, ধৃত আতিকুর লস্করকে গ্রেপ্তারের পর জেরার মুখে সে ভেঙে পড়ে। তারপরই স্বীকার করে যে দেহ লোপাটের জন্য তিন টুকরো করা হয়। মুন্ডুটি গল্ফগ্রিনের আস্তাকুঁড়েতে ফেলা হয়েছিল। বাকি দুটি অংশ রিজেন্ট পার্কে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়েছে। এরপরই তল্লাশি চালিয়ে রিজেন্ট কলোনি এলাকা থেকে উদ্ধার হয় মৃত খাদিজা বিবির বাকি দেহাংশ। টালিগঞ্জের গ্রাহামস রোডে কেন্দ্রীয় সরকারি আবাসনের পাশে শুক্রবার সকালে মহিলার কাটা মাথাটি প্যাকেটে মোড়া অবস্থায় দেখতে পান এক সাফাই কর্মী। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। গল্ফগ্রিন থানার আধিকারিকরা পৌঁছে সেটি উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তদন্তে নেমে গল্ফগ্রিন, নেতাজিনগর ও রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে সিট গঠন করে জেলা পুলিশ। সিটিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ও মোবাইলের টাওয়ার ট্র্যাক করে আতিকুর লস্কর নামে এক রাজমিস্ত্রির খোঁজ পায় তারা। তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে। তাকে শুক্রবার গভীর রাতে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। প্রথমে সে জানায় মৃত খাদিজা বিবিকে সে চেনে।পরিচারিকার কাজ করতেন তিনি। সেই কাজ আতিকুরই দিয়েছিল বলে দাবি করে। কলকাতায় নিয়ে গিয়ে কাজ দিয়ে সাহায্য করে সে।আতিকুরের কথায় সন্তুষ্ট হচ্ছিলেন না তদন্তকারী আধিকারিকরা। পরে আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু ক্লু পান তাঁরা। তারপর আতিকুরকে চাপ দিতে ঘটনার কথা স্বীকার করে সে। জানা যায়, ওই মহিলা আসলে আতিকুরের ভগ্নিপতি। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই মহিলার এই পরিণতি বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁরা দুজনই একই এলাকার বাসিন্দা।শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেন ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কলিতা ও লালবাজারের হোমিসাইড টিম। পাশাপাশি আতিকুরকে জেরা করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় সব স্বীকার করে সে। তার বয়ানের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে রিজেন্ট কলোনি থেকে উদ্ধার হয় মহিলার দুটি পা। পুলিশের দাবি, আরও কিছু অংশ উদ্ধার হওয়া বাকি রয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কলিতা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেও এনিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ”সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তারপর এনিয়ে কিছু বলা সম্ভব।” সবমিলিয়ে, এই ঘটনায় তদন্তকারী দল দ্রুত কিনারার দিকে এগোচ্ছে বলেই আশাবাদী সিট।