Breaking News

শিরা কাটা তিন মৃতদেহ বাড়িতে, বাইপাসে উদ্ধার আহত তিন!ট্যাংরা কাণ্ডে নজরে দুই ভাইয়ের ভূমিকা

নিজস্ব সংবাদদাতা,কলকাতা :- ট্যাংরায় একই বাড়িতে তিনজনের রহস্যজনক মৃত্যু। পরিবারের ৬জন সদস্যের মধ্যে তিনজনের দেহ উদ্ধার। একই বাড়ির দুই বধূ ও এক কিশোরী কন্যার দেহ উদ্ধার হয়েছে ওই বাড়িতে। আবার ওই পরিবারের দুই ভাই ও একজনের নাবালক সন্তানকে বাইপাস থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের গাড়িটি বাইপাসের ধারের পিলারে ধাক্কা দেয়। সেখানেই আহত কবি সুকান্ত মেট্রো স্টেশনের কাছে তাদের গাড়িটি ধাক্কা দেয়। সেই গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তিনজনকে। আহত প্রণয় দে, প্রসূন দে ও তাদের ১৫ বছর বয়সি ছেলেকে ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। অর্থাৎ বাড়িতে তিনজনের দেহ। আর পরিবারের বাকি সদস্যদের উদ্ধার করা হল আহত অবস্থায় বাইপাস থেকে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তাদের। এদিকে গোটা ঘটনায় তদন্তে নেমে একাধিক মিসিং লিঙ্ক ধরা পড়েছে। তবে পুলিশের তদন্তের একটি বড় দিক হল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দেনায় ডুবে ছিল প্রণয়-প্রসূন দে-র পরিবার। একদিকে বাজারে বড় অঙ্কের দেনা অন্যদিকে বিরাট অঙ্কের চেক বাউন্স। কারখানার শ্রমিকদের বেতনও দিতে পারছিল না তারা। সব মিলিয়ে দেনার ডুবেছিল গোটা পরিবার। তাই কি স্ত্রী-সন্তানকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা? তা এখনও স্পষ্ট করেনি কলকাতা পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।বুধবার সকালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ঘটনাস্থলে যান। বাড়িটি পরিদর্শন করেন। তারপর তিনি জানান, ট্যাংরায় একটি বাড়ির তিনটি ঘর থেকে তিনটি আলাদা দেহ উদ্ধার হয়। তবে এটা খুন নাকি আত্মহত্যা, তা স্পষ্ট নয়। সিসিটিভি এবং মোবাইল ফোনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।একই পরিবারের ছয় সদস্য একসঙ্গে কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন? আর্থিক সমস্যা এর একটি কারণ হতে পারে, জানিয়েছেন রুপেশ। প্রাথমিক ভাবে আহতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমন সমস্যারই ইঙ্গিত মিলেছে। তবে সেই দাবি খতিয়ে দেখা হবে। এলাকার কাউন্সিলর বলেছেন, ‘‘পরিবারটিকে আমি চিনতাম। ওদের চামড়ার ব্যবসা ছিল। অত্যন্ত ভদ্র পরিবার। দীর্ঘ দিন ধরে এখানে থাকতেন। ওদের কোনও আর্থিক সমস্যার কথা আমি জানতে পারিনি।’’ইতিমধ্যে ট্যাংরায় গিয়েছেন লালবাজার হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। গিয়েছেন রুপেশ নিজেও। পৌঁছেছে ডগ স্কোয়াড। তিন জনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কী কারণে এই আত্মহত্যা, তা নিয়ে রহস্য ক্রমে জটিল হচ্ছে। ছ’জন একসঙ্গে আত্মহত্যার জন্য ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন কি না, তিন যুবক বাকিদের হাতের শিরা কাটতে দেখে বেরিয়েছিলেন কি না, নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। উদ্ধার হওয়া দেহগুলির মধ্যে পরিবারের বড় বউ সুদেষ্ণা দে-র কবজিতে ক্ষত, ছোট বউ রোমি দে-র গলায় ক্ষত রয়েছে। প্রসূনের মেয়ে প্রিয়ম্বদা দে-র পায়েসে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মারা হয়েছে বলে খবর। তিনতলার ঘর থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার হয়েছে। তবে রক্ত ছড়িয়েছিল গোটা বাড়িতেই। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া প্রসূন দে-র হাতে দাগ ছিল। আবার প্রণয় দে-র ছেলে প্রতিপ গাড়িতে ছিল। তার হাতেও দাগ। ওই ছুরির আঘাতেই কি দুজনের হাতে দাগ তৈরি হয়েছিল?জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বাড়ি অন্ধকার ছিল। দে পরিবারের চামড়ার ব্যবসা। চামড়ার কারখানার শ্রমিকদের বেতন নিয়ে সমস্যা চলছিল। ২৩ লক্ষ টাকার চেক বাউন্স হয় দে পরিবারের। বাজারেও ৩০ লক্ষ টাকার দেনা হয়েছিল। সেই আর্থিক টানাপোড়েনের জেরেই কি এই হত্যাকাণ্ড, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *