দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- আহিরিটোলা কাণ্ডে উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। পুলিশ ধৃত মা-মেয়েকে প্রাথমিকভাবে জেরা করেছে। আজ বুধবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছিল মা ও মেয়েকে। বিচারক ধৃতদের একদিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামিকাল তাদের দুজনকে বারাসত আদালতে তোলা হবে।প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে ইঁট দিয়ে খুন করার পরে বাড়িতে পড়েছিল দেহ। এরপর গোটা দিন কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় রেইকি করেছিলেন মা আরতি ঘোষ ও মেয়ে ফাল্গুনি ঘোষ। তারা মূলত খুঁজছিলেন নির্জন কোনও জায়গা যেখানে তাদের সন্দেহ করা হবে না। এরপর তাঁরা কুমোরটুলির ঘাটে এসেছিলেন। সেই ঘাট দেখে তাদের মনে হয়েছিল এই জায়গটি বেশ নির্জন। সকালবেলার দিকে আরও নির্জন থাকবে। সেই অনুসারে তারা এই কুমোরটুলির ঘাটকে বেছে নিয়েছিলেন। সেই মতো তারা কিছুটা ভ্যানে আসার পরে ট্রলি চাপিয়ে ফেলেন ট্যাক্সিতে। এরপর সোজা কুমোরটুলির ঘাটে। নির্জন ঘাট। কেউ কোত্থাও নেই। বেশ ভারি ব্যাগ। কোনওরকমে সেই ব্যাগ তারা নামিয়েছিলেন। টেনে বেশ কিছুটা নিয়েও গিয়েছিলেন তারা।
দুজনকে ভারী ট্রলি টেনে নিয়ে যেতে দেখে সন্দেহ হয় এক মহিলার। ট্রলি ফেলার আগেই মা মেয়েকে ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। এরপর পুলিশ গিয়ে ট্রলি খুলতেই পর্দাফাঁস। রবিবার বিকালে পিসিশাশুড়িকে খুন করার অভিযোগ মা মেয়ের বিরুদ্ধে। এরপরই শুরু হয় দেহ লোপাট করার ছক। সেই মতো কুমোরটুলির ঘাটকে বেছে নেয় তারা। তবে সেই সঙ্গেই সন্দেহ করা হচ্ছে এর আগে কুমোরটুলির সঙ্গে তাদের আগাম পরিচয় ছিল।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, আরতি ঘোষের স্বামী অর্থাৎ ফাল্গুনির বাবা একটা সময় কুমোরটুলি অঞ্চলে থাকতেন। সম্ভবত রেইকিতে বেরিয়ে তারা কুমোরটুলির ঘাটেও ঘুরে দেখেছিল। কিন্তু ছকে কিছুটা ভুল হয়ে গিয়েছিল। তার জেরেই ধরা পড়ে গেলেন তারা। বারাসত আদালতেই এই মামলার শুনানি হবে। আগামিকাল ধৃত দুজনকে সেখানে তোলা হবে। এদিনই ধৃত ফাল্গুনী ঘোষকে নিয়ে মধ্যমগ্রামের ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন নর্থ পোর্ট থানার ফরেনসিক আধিকারিকরা। খুনে ব্যবহার করা ইট উদ্ধার হয়েছে। যে বাড়িতে ধৃতরা ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জমিতে ওই ইট পাওয়া গিয়েছে। বটি দিয়ে মৃতের পা কাটা হয়েছিল। সেটি এখনও উদ্ধার হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, সেটি পুকুরে ফেলা হয়েছে।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal