Breaking News

মালদহে ইতিহাস বিজড়িত প্রথা মেনে দিনের আলোয় পূজিতা হয় দশ মাথা কালী মাতা,বিশেষত্ব বলি প্রথা ও শোল মাছের টক প্রসাদ!

দেবাশীষ পাল,মালদহ :- সামনেই কালীপুজো | আর এই কালীপুজোয় মালদহে ইতিহাস বিজড়িত প্রথা মেনে দিনের আলোয় পূজিতা হয় দশ মাথা কালী মাতা, যা মহাকালি নামে পরিচিত | প্রথম থেকেই এই পুজো প্রথমে অমাবস্যার পরিবর্তে চতুর্দশী তিথিতে অনুষ্ঠান ও পুজো হয়ে আসছে| পাঠা বলি দিয়ে রক্ত উৎসর্গের মাধ্যমে পুজো শুরু হয়| বলির শেষে শোল মাছের টক রান্না করে দেওয়া হয় মাকে | চতুর্দশীর সকালে মৃৎশিল্পীর ঘর থেকে শোভাযাত্রা সহকারে মন্দির পর্যন্ত মাকে নিয়ে যাওয়া হয় শোভাযাত্রা সহকারে | শোভযাত্রায় বিভিন্ন ধরনের বাদ্য বাজনার আয়োজন করা হয় | পাশাপাশি পাঁচ দিন ধরে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান | শেষের দিন নরনারায়ণ সেবা |
সালটা ১৯৩০, দেশে তখন ইংরেজদের রাজত্ব| ব্রিটিশ শাসকদের সেই অত্যাচার সহ্য করতে পারছিল না মালদহবাসী| সেই সময় পুড়াটুলির কিছু মানুষ ব্রিটিশ শাসকের অত্যাচারের বিরুদ্ধে শুরু করেন কালীর আরাধনা | শক্তির আরাধনায় তাদের আরাধ্য ছিলেন দশ মাথা মহাকালি | সেই পুজো এখনও হয়ে আসছে | তবে পুড়াটুলি থেকে পুজোর স্থান পরিবর্তন হয়ে এসেছে ইংরেজবাজার শহরের গঙ্গাবাগে | সারা জেলায় এই পুজো দশ মাথার কালী নামে পরিচিত | চতুর্দশীর দিন ধুমধাম করে পূজিতা হন এই দেবী | কালীমূর্তিতেও বিশেষ অর্থ রয়েছে | দেবীর ১০ মাথা, দশ হাত ও ১০ পা রয়েছে | প্রতিমায় শিবের কোন অস্তিত্ব নেই | দেবীর পায়ের তলায় রয়েছে অসুরের কাটা মুন্ডু | প্রত্যেক হাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র |পুজো উদ্যোক্তারা জানালেন, শ্রী শ্রী চন্ডী গ্রন্থের বৈকৃতিক রহস্য এই মূর্তির উল্লেখ পাওয়া যায় | বিহারের বিন্দুবাসিনীতে পাহাড়ের গায়ে ও প্রাচীন যুগে খোদাই করা রয়েছে এই মূর্তি | গঙ্গাবাগ এলাকায় মায়ের মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে ১৯৮৫ সালে | স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, বর্তমানে যেখানে মহাকালের মন্দির রয়েছে, সেখানে তন্ত্র সাধনা করতেন এলাকার বাসিন্দা প্রফুল্ল ধন মুখোপাধ্যায় | সাধনার জন্য তৈরি করে পঞ্চমুন্ডির আসন | সেই আসনের ওপরে দেবীর বেদি নির্মিত হয়েছে| প্রফুল্লবাবুর মৃত্যুর পর তার বংশধর ও স্থানীয় মানুষজন এই পুজো চালিয়ে আসছেন| বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছে ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতি |

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *