নিজস্ব সংবাদদাতা :- দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে আইনি স্বীকৃতি পেলেন যৌনকর্মীরা | দেহ ব্যবসাকে আর পাঁচটা সাধারণ কাজের মতো ‘পেশা’ হিসাবে স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্ট| বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, যৌন পরিষেবা দেওয়াটাও আইনস্বীকৃত পেশা| যারা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তাদেরও সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার আছে | বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই সংক্রান্ত ছ’টি নির্দেশিকা জারি করেছে| তার মধ্যে দিয়ে যৌনকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী | যখন এটা স্পষ্ট যে, যৌনকর্মী এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং সম্মতি সাপেক্ষেই যৌনতা বিক্রি করছেন, তখন পুলিশকে অকারণ হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে| কোনও ফৌজদারি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাবে না | সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে |’আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যৌনপল্লিতে পুলিশি অভিযানের সময় যৌনকর্মীদের গ্রেফতার, দণ্ডিত করা, হেনস্থা করা উচিত নয় | কারণ যৌনকর্ম বেআইনি নয়, শুধুমাত্র যৌনপল্লি চালানো বেআইনি | শুধু দেহ ব্যবসাকে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য কোনও মহিলাকে তাঁর সন্তানের থেকে আলাদা করা যাবে না | কোনও শিশু পতিতালয়ে থাকছে মানেই তাঁকে পাচার করে আনা হয়েছে এটা ধরে নেওয়া যাবে না | শীর্ষ আদালতের এই নয়া নির্দেশিকায় দেশের প্রায় ৯ লক্ষ যৌনকর্মী উপকৃত হবেন | বহু যৌনকর্মীকে পরিষেবা দিতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হয় | পাশাপাশি যদি কোনও যৌনকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তা হলে দ্রুততার সঙ্গে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে তদন্ত শুরু করতে হবে | এ ক্ষেত্রে, এক জন সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধার অধিকারী, এক জন যৌনকর্মীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা করা যাবে না| কোনও ঘটনা ঘটলে যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছে আদালত | সুপ্রিম কোর্ট এই সুপারিশগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্রের মতামতও জানতে চেয়েছে,২৭ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি |