প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- অবশেষে দুই অপহৃত ছাত্রদের দেহ উদ্ধার হল। বাগুইআটির ওই দুই ছাত্রকে অপহরণের পর মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজ করা হয়েছিল। নিখোঁজ হওয়ার ১৪ দিনের মাথায় উদ্ধার হল তাদের মৃতদেহ। দুই কিশোর ছাত্রের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী পলাতক। তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা।বাগুইআটির জগৎপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রের নাম অতনু দে। বয়স মাত্র ১৭ বছর। বাবা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। জানা গিয়েছে, গত ২২ আগস্ট অতনু ও অভিষেক নস্কর নামে দুই কিশোর বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর আর ফেরেনি তারা। এরপর অতনুর বাবার কাছে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজ যায়। ২৪ তারিখ অতনুর বাবা বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। শুরু হয় তদন্ত। প্রথমেই গ্রেফতার করা হয় অভিজিৎ নামে এক যুবককে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিজিৎকে জেরা করতেই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।পুলিশের দাবি অভিজিৎ জানায়, ঘটনার নেপথ্যে সত্যেন্দ্র। ২২ তারিখ বিকেলে নাকি অতনু ও অভিষেককে নিয়ে বেড়িয়েছিল সত্যেন্দ্র। তাদের একটি বাইকের শোরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টাকা পয়সা সংক্রান্ত কিছু সমস্যা হয়। এরপর গাড়িতে চারজন অর্থাৎ সত্যেন্দ্র, অভিজিৎ, অতনু ও অভিষেক বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়েতে যায়। গাড়িতেই নাকি শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় অতনু ও অভিষেককে। এরপর একজনের দেহ ফেলে দেওয়া হয় বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ের পাশে। অপর দেহ ফেলে দেওয়া হয় বসিরহাটে।অভিজিতের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের ভিত্তিতে বসিরহাট থেকে অতনুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিছুক্ষণের ব্যবধানে উদ্ধার হয় অভিষেকের দেহও। ইতিমধ্যেই পরিবারের সদস্যরা ২ কিশোরের দেহটি শনাক্ত করেছে। এদিনের অতনুর মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। সত্যেন্দ্রর বাড়িতে চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। তবে বেপাত্তা সত্যেন্দ্র। তার খোঁজে চলছে তল্লাশি।মঙ্গলবার বিকেলে বিধাননগর পুলিশের ডিসি ডিডি তৌসেফ আলি আজহার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ‘অতনু সত্যেন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা দেয় এক বিশেষ ব্র্যান্ডের মোটর সাইকেল কেনার জন্য। তারপর সত্যেন্দ্র সেই মোটর সাইকেল কেনেনি। বরং অতনুর কাছ থেকে আরও টাকা দাবি করে সত্যেন্দ্র। যেটা অতনু দিতে রাজি হয়নি। সেখান থেকে গন্ডগোলের সূত্রপাত।’