দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালে প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অ্যাপ্টিটিড টেস্ট হয়েছিল কিনা তা জানতে ইন্টারভিউয়ারদের বয়ান রেকর্ড করছিল আদালত। রুদ্ধদ্বার কক্ষে ৩ জেলার ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারের বয়ান রেকর্ড করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় হুগলি জেলার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ইংরেজির শিক্ষককে ইংরেজিতে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু শিক্ষক বিচারপতিকে বাংলায় প্রশ্ন করতে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কী করে তিনি শিক্ষাকতা করছেন। এই মামলা চলাকালীন ওই শিক্ষক শুক্রবার আবার এজলাসে হাজির হন। তাঁকে দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি তৎক্ষণাৎ ওই শিক্ষককে এজলাস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। না বেরোলে তাঁকে আর্দালি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সরাসরি মন্তব্য করেন, “অ্যাপটিটিউড টেস্ট যে নেওয়া হয়নি তার প্রমাণ মিলেছে। পর্ষদের হলফনামাও সেই কথাই বলছে।” বিচারপতি এই নিয়ে নিশ্চিত হতে যাঁরা টেস্ট নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দাবি করেছিল, তাঁদেরই ডেকে রুদ্ধদ্বার কক্ষে জেরা করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁরা সেখানে উপস্থিত হয়ে জানিয়ে দেন তাঁরা কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্টই নেননি। বিনা পরীক্ষায় নম্বর যুক্ত করে অন্তত ২৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয় বলে দাবি করা হয়েছে। আর সেখানেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।এদিকে, এক ইন্টারভিউয়ার তথা উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক, যিনি ২০১৪ সালের প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন অথচ ইংরেজিতে প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, “ইংরেজি জানি না, বাংলায় বলব।”
রুদ্ধদ্বার শুনানিতে বিচারপতিকে এমনই জবাব দিয়েছিলেন। যার প্রেক্ষিতে শুক্রবার হাই কোর্টে এসে ‘গেট আউট’ শুনতে হল ওই ইন্টারভিউয়ারকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রীতিমতো তিরস্কার করে তাঁকে এজলাস থেকে বের করে দেন।যা নজিরবিহীন। শুধু তাই নয়, তিনি আর স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে এদিনই বোর্ডকে সুপারিশপত্র পাঠাবেন বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, অথচ ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না! ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটুকু যোগ্যতা নেই, তিনি কী ইন্টারভিউ নেবেন?’’