Breaking News

বৃষ্টিতে পুরসভার পরিত্যক্ত পাম্প হাউসের ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্যু যুবকের!পুনরাবৃত্তি রুখতে কড়া নির্দেশ মেয়রের

দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতায় এসে একটি পরিত্যক্ত পুরনো পাম্প হাউসে আশ্রয় নিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই পাম্প ভেঙে মৃত্যু হল ওই ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকেলে রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার ৩ নম্বর লেক কলোনিতে। মৃতের নাম পাপ্পু দাস (৩৬)। জানা গিয়েছে, তিনি ঝাড়খণ্ডের কোডারমার বাসিন্দা। বহু পুরনো ওই পাম্প হাউসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। কিন্তু, সাশ্রয়ের আশায় সেই পাম্প হাউসেই অস্থায়ী আস্তানা গড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। বুধবার বিকেলে আচমকা সেই পাম্প হাউস ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়।এই ঘটনায় পুরসভার ওই পরিত্যক্ত পাম্প হাউসের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই পুরসভার পরিত্যক্ত পাম্প হাউসগুলি খুঁজে বার করে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।পুলিশ জানিয়েছে, পরিত্যক্ত ওই ঘরটিতে থাকতেন পাপ্পুর জামাইবাবু দেবনারায়ণ দাস। দেবনারায়ণ জানান, তিনি কলকাতা পুরসভার সাফাইকর্মী হিসাবে কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওই পরিত্যক্ত ঘরে থাকতাম। পাপ্পু থাকতেন গোপালনগরে। তিনিও সাফাইয়ের কাজ করতেন। এদিন তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।” তবে, দুর্ঘটনার সময়ে তিনি ওই ঘরে ছিলেন না বলেই জানিয়েছেন দেবনারায়ণ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিকেলের দিকে পাপ্পু ওই ঘরে একাই ছিলেন। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। আচমকা ওই ঘরটির ছাদের একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা বিট্টু পাল বলেন,‘‘আচমকা একটা বিকট শব্দ। এসে দেখি, এই অবস্থা।’’খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ এবং দমকল বাহিনী। গুরুতর জখম পাপ্পুকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙে পড়া ওই ঘরের মধ্যে রয়েছে হাঁড়ি, জলের বোতল-সহ গেরস্থালির নানা সামগ্রী। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাতে দেবনারায়ণ-সহ বেশ কয়েক জন ওই ঘরে থাকতেন।

কিন্তু পুরসভার জরাজীর্ণ এবং পরিত্যক্ত ওই পাম্প হাউসের কেন এত দিন কোনও রকম রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি?কেন ওই রকম একটি বিপজ্জনক ঘরে মানুষজন থাকছিলেন?এদিনের ঘটনার পরে এই সমস্ত প্রশ্ন উঠেছে। ওই পাম্প হাউসটি পুরসভার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে। সেই ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সৌরভ বসু এ দিন বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভার পরিত্যক্ত ওই পাম্প হাউসে ব্লিচিং পাউডার, ঝাঁটা ইত্যাদি রাখা থাকত। সেখানে কাউকে থাকতে নিষেধ করা হয়েছিল।’’ রাতের দিকে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক দেবাশিস কুমার। তিনি বলেন, ‘‘এখানে কারও থাকার কথা নয়। এটা ভেঙে দেওয়ার কথা। কিন্তু এই ঘরটি পুরসভার পাম্প হাউস। তাই এটি ভেঙে ফেলার দীর্ঘ প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে, যতটা তৎপরতার সঙ্গে এই জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙে ফেলা দরকার ছিল, তা করা হয়নি।’’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *