দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- হাড়হিম করা সিসিটিভি ফুটেজ। আর সেই ফুটেজ দেখে শিউরে উঠতে হয়! সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, নিজের ফ্ল্যাটেই কীভাবে এক বয়স্ক মহিলার মৃত্যু হল, বলা ভালো, কীভাবে তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হল | আর তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলেন তাঁরই পরিচর্যায় রাখা আয়া। ভয়ংকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটিতে। অসহায়তার সুযোগ নিয়ে নৃশংসতা। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোয় বৃদ্ধাকে বেধড়ক মারধর। শেষ পর্যন্ত প্রাণ গেল বৃদ্ধার। প্রকাশ্যে অত্যাচারের সিসিটিভি ফুটেজ। বাগুইআটির অভিজাত আবাসনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য।সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোর শাস্তি হিসাবে আয়া সোফিয়া খাতুন বেধড়ক মারধর করছে তাঁকে। চড়, থাপ্পড় দেয় আয়া। দুর্বল শরীর নিয়ে অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ারও চেষ্টা করেন বৃদ্ধা। তবে তা সত্ত্বেও লাভ হয়নি কিছুই। রাতভর অত্যাচারের পর মৃত্যুই হয় তাঁর। তড়িঘড়ি বাগুইআটি থানার দ্বারস্থ হন বৃদ্ধার পরিবারের লোকজন। প্রমাণ হিসাবে ওই সিসিটিভি ফুটেজ থানায় জমা দেওয়া হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই আয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ঐশ্বর্য সাগর জানান, পুলিশের জেরায় নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে সে। জানায়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় বৃদ্ধাকে মারধর করে। আর তার জেরেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধার।গত ১১ সেপ্টেম্বর কলকাতা লাগোয়া বাগুইআটির অনুপমা আবাসনে নিজের ফ্ল্যাটেই মৃত্যু হয় ৭০ বছরের বৃদ্ধা কলা মিশ্রের। ৭ বছর ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। ২ জন আয়া তাঁর দেখভাল করতেন। একজন দিনে ও একজন রাতে। বৃদ্ধার ফ্ল্যাটে আর কেউ থাকতেন না। দীর্ঘ রোগভোগের পর বৃদ্ধার মৃত্যু হওয়ায় তেমন অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি কারও। তাই বিধি মেনে তাঁর দেহের সৎকারও করে ফেলেন সন্তানরা। এর পর বৃদ্ধার ঘরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করেন তাঁরা। তাতে দেখা যায়, ১০ সেপ্টেম্বর সারা রাত ধরে বৃদ্ধার ওপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছেন রাতে তাঁর দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সোফিয়া খাতুন। মারধরের পাশাপাশি বৃদ্ধার মুখে বালিশ চাপা দিতে দেখা যায় তাঁকে। এরপরই ওই মহিলার বিরুদ্ধে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে বৃদ্ধার পরিবার। অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত আয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।